করোনা মহামারীতেও চট্টগ্রামের ক্রীড়া জগতে ছিল ভালো-মন্দের মিশেল। এবছর জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ইভেন্টে পুরস্কার বয়ে এনেছেন চট্টগ্রামের ক্রীড়াবিদরা। প্রত্যাশা অনুযায়ী সাফল্য না থাকলেও সামনের দিনগুলোতে আরও ভালো করার প্রত্যাশা করেন ক্রীড়া জগতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংগঠকরা।
চট্টগ্রামে ক্রীড়া ক্ষেত্রে উন্নয়নে কাজ করছে জেলা ক্রীড়া সংস্থা (সিজেকেএস)। সিজেকেএস’র তথ্যানুযায়ী, এবছর জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগীতায় ৫টি স্বর্ণ, সাইক্লিং প্রতিযোগীতায় ১টি স্বর্ণ, অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় ১টি রৌপ্য ও ১টি ব্রোঞ্জ, তাইকোয়ানডোতে ২টি রৌপ্য ও ৫টি ব্রোঞ্জ, রোলার স্কেটিং এর রোড স্কিপিং এ ১টি স্বর্ণ, সেপাক টাকরোতে রানারআপ, উশুতে ১টি রৌপ্য ও ২টি ব্রোঞ্জ, বাস্কেটবলে মহিলা দল রানারআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত অতি সম্প্রতি সমাপ্ত হওয়া বাংলাদেশ গেমসে পদক তালিকায় ৬৪ জেলার মধ্যে চট্রগ্রাম জেলা শীর্ষে ছিল। তাছাড়া মুজিববর্ষ ফুটবল টুর্নামেন্টে চট্টগ্রাম জেলা বিভাগীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
সিজেকেএস’র যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর ৩০ থেকে ৩২ ইভেন্ট চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে পরিচালিত হয়ে থাকে। প্রত্যেক ক্যালেন্ডার ইয়ারে আমরা তা শেষ করে থাকি। আমাদের সাধারণ সম্পাদক এ কাজে উৎসাহিত করেন। প্রত্যেক ইভেন্টের জন্য আমরা প্রশিক্ষক রেখেছি। আমার যে পদক্ষেপ নিয়েছি, আশা করছি ভবিষ্যতে আমরা ভালো মানের খোলোয়াড় তৈরি করতে পারবো।
তিনি বলেন, অভিভাবকের প্রতি অনুরোধ লেখাপড়ার পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ করে তুলতে হবে। ক্রীড়াক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সত্যি। কিন্তু সংকট থাকলেও ক্রীড়াক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার অর্থ সম্পাদক শাহাবুদ্দীন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, চট্টগ্রাম জেলার সাফল্য জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদের সমন্বিত কর্মের ফসল। বিশেষ করে সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ক্রীড়া পরিবারের অভিভাবক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুপ্রেরণামূলক পদক্ষেপ সাফল্যের পিছনে মূল ভূমিকা পালন করেছে।
‘করোনাকালীন সময়ে তিনি চট্টগ্রাম জেলার খোলায়াড়দের ও অনুমোদিত ক্লাবগুলোকে সহায়তার ব্যবস্থা করেছেন যাতে তারা খেলাধুলা বিমুখ না হয়। করোনা পরবর্তী সময়ে তিনি চট্টগ্রাম জেলার ক্রীড়াঙ্গনকে সচল রাখতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ফুটবল, ক্রিকেটসহ বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজন করেন। এছাড়া সিজেকেএস থেকেও ক্লাবগুলোকে আর্থিক সহায়তা করা হয়’।
নতুন খেলোয়াড় উঠে না আসার পিছনে মাঠ সংকটকে দায়ী করার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের আগ্রহ এবং প্রচেষ্টা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার এ সংগঠক বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় অন্যান্য লজিস্টিক সাপোর্ট থাকলেও পর্যাপ্ত মাঠের অভাব এবং খেলোয়াড়দের পরিশ্রম করার অনাগ্রহতা খেলোয়াড় তৈরি করার পথে অন্তরায়। তবুও চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা খেলাধুলার উন্নয়নে এরই মধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া অব্যাহত রেখেছে। উপজেলা পর্যায়ে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চালুর উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সিজেকেএস।
তিনি বলেন, প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করা মেধাবী খোলায়াড়দের পুনর্বাসনের জন্য সিজেকেএস’র পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় এবং জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করলে সেখান থেকে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ তৈরি হয়।