করোনার সংক্রমণ রোধে নতুন করে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। যাত্রী পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা, বাধ্যতামূলক মাস্ক পরার কথা থাকলেও তা উপেক্ষিত চট্টগ্রামের গণপরিবহনে। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের কাজির দেউড়ী, আন্দরকিল্লা, লালখান বাজার ও নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ গণপরিবহনে যাত্রীদের ঠাসাঠাসি করে ওঠানো হচ্ছে। স্বাস্থ্যগত সুরক্ষার নীতি মানছেন না যাত্রীদের অনেকে। মাস্ক থাকলেও কারও হাতে, কারও পকেটে। অধিকাংশ হেলপার ও চালকের মাস্ক থুতনিতে। সব সিটে যাত্রী নেওয়ার পরেও দাঁড় করিয়ে যাত্রী নিতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রামের অলংকার থেকে সীতাকুণ্ড রোডে চলাচলকারী ৮নং বাসের যাত্রী সাইফুল মাহমুদ বলেন, প্রতি সিটে যাত্রী নিয়েছে। দাঁড় করিয়েও যাত্রী নিয়েছে। বাসের চালক ও হেলপারের মাস্ক ছিল থুতনিতে। গাড়িতে যাত্রী ওঠানোর সময় হাতে স্যানিটাইজার দেওয়া হয়নি।
চট্টগ্রামের নিউমার্কেট থেকে ১ নম্বর রোডে চলাচলকারী বাসের যাত্রী সানজিদা আক্তার বলেন, যে বাসটিতে উঠেছি সে বাসের হেলপারের মুখে মাস্ক ছিল না। প্রতিটি সিটেই যাত্রী। এমনকি দাঁড় করিয়েও যাত্রী নেওয়া হচ্ছে।
১ নম্বর বাসের এক হেলপারকে মাস্ক কোথায় জিজ্ঞেস করলে বলেন, মাস্ক পকেটে। ছবি তুলতে গেলে পকেট থেকে মাস্ক বের করে পরেন তিনি।
এদিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন বাস মালিক সমিতির সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, বাসের চালক ও হেলপারদের বলে দেওয়া হয়েছে যত সিট তত যাত্রী তোলার জন্য। মাস্ক পরতেও বলা হয়েছে। কেউ আইন অমান্য করলে তাকে শাস্তি দিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। গাড়ি স্যানিটাইজ করা হচ্ছে না- এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, গাড়ি থেকে যাত্রী নামানোর পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেই আবার যাত্রী তোলা হচ্ছে।
সরকারি বিধিনিষেধে বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাট্টলী সার্কেল সুবল চাকমার নেতৃত্বে শনিবার চট্টগ্রামের অলংকার ও আকবরশাহ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, মাস্কবিহীন চলাফেরা করায় ১২ মামলায় ৪ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফ্রিতে মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
পদশে গত কয়েকদিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বেড়েছে। শুক্রবার শনাক্তের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে নতুন ধরন ওমিক্রন উদ্বেগ বাড়িয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় গত ১১ জানুয়ারি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সরকার ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সমাবেশ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখাসহ ট্রেন, বাস ও লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন, সব ধরনের যানের চালক ও সহকারীদের করোনার টিকা নেওয়ার সনদ সঙ্গে রাখার কথা বলা হয়েছে।