আজ শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চকরিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে পুরুষ সিংহ সোহেলের মৃত্যু

এম.মনছুর আলম, চকরিয়া (কক্সবাজার) : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ০১:১৫:০০ অপরাহ্ন | কক্সবাজার প্রতিদিন

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বার্ধক্য জনিত অসুস্থতার কারণে একটি বয়স্ক সিংহ (পুরুষ) মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া সিংহের নাম ছিল সোহেল। পার্কের রেকর্ডমতে সিংহটির বয়স প্রায় ২২ বছর। 

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সিংহটি পার্কের বেষ্টনী আবদ্ববস্থায় মারা যায়। ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম সিংহ মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

জানা গেছে, ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে মারা যাওয়া পুরুষ সিংহ (সোহেল) চার বছর বয়সে বিগত ২০০৪ সালে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে সাফারী পার্কে সংগ্রহ করা হয়। সেই থেকে সিংহ সোহেলের বয়স পার্কের রেকর্ডপত্র অনুযায়ী দেখা যায় প্রায় ২২ বছর। প্রাকৃতিক ভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় একটি সিংহ ১৫ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে বলে সূত্রে জানায়। মারা যাওয়া সিংহ সোহেল ছাড়াও সাফারী পার্কে বর্তমানে আরো চারটি সিংহ রয়েছে। এসব সিংহের মধ্যে দুটি সিংহ (পুরুষ) ও দুটি সিংহ (স্ত্রী)। বর্তমানে পার্কের বেষ্টনীতে যে চারটি স্ত্রী-পুরুষ সিংহ রয়েছে তা মারা যাওয়া সিংহ সোহেলের বংশধর। 

সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, বিগত তিন বছর পূর্বে ২০১৯ সালের ফ্রেব্রুয়ারির দিকে প্রথমে সিংহটির নানা ধরণের অসুস্থতা শনাক্ত হয়। সিংহটির শারীরিক অসুস্থতা শনাক্ত হওয়ার পর তৎকালীন বিভাগীয় বন কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী সিংহটির সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এ্যানিমেল সাইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন অধ্যাপক ২০১৯ সালের ২১ ফ্রেব্রুয়ারী এবং ২০২০ সালের ৮ আগস্টে সরেজমিন  সাফারী পার্কে এসে সিংহটি পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসা প্রদান করেন। ওই সময় পর্যবেক্ষক  টীমের মতামতে পুরুষ সিংহটি তার স্বাভাবিক আয়ুকালের শেষ পর্যায়ে অবস্থান এবং বার্ধক্যজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে তারা জানায়। বয়স বৃদ্ধির কারণে এরপরে সিংহটি নানা সমস্যা দেখা দেয়। তার দাঁত ক্ষয় হওয়াতে শক্ত কোন ধরণের খাবার খেতে পারেনা, শরীরের বিভিন্ন অংশে চামড়ায় ভাঁজ পড়ে (গলা ও পেঠের নিচে), শরীরের ওজন পূর্বের চেয়ে একতৃতীয়াংশ হ্রাস পেয়েছে। এছাড়াও পূর্বের ন্যায় গর্জন করতে পারে না, চোখের দৃষ্টি শক্তি হ্রাস পাই।

নির্দিষ্ট এক জায়গায় শুয়ে থাকতে থাকতে সিংহটির শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলাফেরা করতে অক্ষমসহ নানা সমস্যা দেখা যায়। ফলে সিংহটি দীর্ঘ ৩ থেকে ৪ বছর যাবত বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিল। বুধবার বিকেলে বয়স্ক এই সিংহটি পার্কের বেষ্টনী আবদ্ববস্থায় স্বাভাবিক ভাবে মারা যান। এ ঘটনার বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলমাম বাদী হয়ে ঘটনার দিন বুধবার রাতে চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরী নং-১১১২ রুজু করেন।

এদিকে, সাফারী পার্কে মারা যাওয়া পুরুষ সিংহটির (সোহেল) ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন চকরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দী এবং সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন হাতেম সাজ্জাদ মো: জুলকার নাইন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলমাম বলেন, পার্কে মারা যাওয়া পুরুষ সিংহ (সোহেল) দীর্ঘ ৩ থেকে ৪ বছর যাবত বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ছিল। স্বাভাবিক অবস্থায় একটি সিংহ ১৫ থেকে ১৮ বছর বেঁচে থাকে। মৃত এই পুরুষ সিংহটি রেকর্ড  অনুযায়ী বয়স প্রায় ২২ বছর। মূলত 

সিংহটি বার্ধক্যজনিত কারণে স্বাভাবিক ভাবে পার্কের বেষ্টনীতে মারা গেছে বলে তিনি জানান।