আজ রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

গৃহহীন শাহেনাকে মাথাগোঁজার ঠাই করে দিলো ইউপি চেয়ারম্যান বাবলা

এম.মনছুর আলম, চকরিয়া (কক্সবাজার) | প্রকাশের সময় : শনিবার ১৩ অগাস্ট ২০২২ ০৪:২৮:০০ অপরাহ্ন | কক্সবাজার প্রতিদিন

* ইউপি চেয়ারম্যানের অর্থায়নে আরো দুই দরিদ্র পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে গৃহ নির্মাণ

* অর্ধশতাধিক দরিদ্র ও অস্বচ্ছল পরিবারের মেয়েকে বিয়ে দেয়া 

 

অভাবের সাথে বসবাস বিধবা শাহেনা বেগমের। সঙ্গী থাকে ঝড়বৃষ্টি-শীতের তীব্রতাও-এরই সাথে যুদ্ধ করে বাঁশের বেড়া এবং পলিথিনে মোড়ানো অন্যের আশ্রয়ের ঘরে তিন সন্তানকে নিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম তার। নুন আনতে পান্তা ফুরানোই শুধু নয়-সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকাটাই বড় চ্যালেঞ্জ সেখানে।

গৃহহীন সেই শাহেনা বেগমের পাশে দাঁড়ালেন তামুুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের তিনবারের চেয়ারম্যান আলহাজ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা। শাহেনা বেগমের জীবন সংগ্রাম করার কথা শুনে নিজস্ব অর্থায়নে দুই লাখ টাকা ব্যয়ে টিনসেড পাকা ঘর নির্মাণ করে বসবাস করার ব্যবস্থা করে দিলেন তিনি। এ ছাড়াও বিধবা গৃহহারা দুই দরিদ্র পরিবারকে ৫লক্ষ টাকা ব্যায়ে গৃহ নির্মাণ এবং অর্ধশতাধিক দরিদ্র অস্বচ্ছল পরিবারের মেয়েকে বিয়ে দেন তিনি।

 

জানাগেছে, উপজেলার পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডস্থ দরবেশকাটা স্কুল সংলগ্ন এলাকার আকতার আহমদ ও শাহেনা বেগম দম্পতি এক জমিদারের জায়গার মধ্যে থেকে সুখের সংসার করে আসছিলেন। তাদের সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। হঠাৎ করে আকতার আহমদ দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে সুখের সংসারে নেমে আসে অন্ধকার।

পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে  অসহায় ও মানবেতর দিনাতিপাত করে আসছিল বিধবা শাহেনা বেগম।  স্বামীর নিজস্ব জমি-জমা না থাকায় অন্যের জায়গার মধ্যে বসবাস করে সন্তানদের নিয়ে। তাদের লালন-পালন ও মাথাগোঁজার ঠাঁই নিয়ে ছিলেন চরম অনিশ্চয়তা অন্যের খামার বাড়িতে বেড়া এবং পলিথিন মোড়ানো ঘরে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বসবাস করে আসলেও হঠাৎ একদিন জায়গার জমিদার একমাসের ভেতরে খামার বাড়িটি ছেড়ে দিতে বলেন। এতে বিধবা শাহেনা বেগম তার স্কুল পডুয়া ছেলে-মেয়েদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়ে যান। ঠিক এমন সময় দেবদ্যূত হয়ে পাশে দাঁড়ান বাবলা।

ওই সময় এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান এক পরিবারের বিচার করতে গেলে অসহায় বিধবা শাহেনা বেগম ও সন্তানদের গৃহহীন দেখে কষ্ট লাগে তার। পরে ১৫ দিনের ভেতরে চেয়ারম্যান নিজের অর্থায়নে একটি টিনসেড পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেন।

 

টিনসেড পাকা ঘর পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে বিধবা শাহেনা বেগম বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর অসহায়ের মত মানুষের খামার বাড়িতে নিরুপায় হয়ে বসবাস করছিলাম। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোথাও বসবাস করার ঠিকানা না পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলাম। আমার আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই। কোনভাবে খেয়ে জীবন পার করছি। জমি কিনে ঘর করার মতো আমার কোনো অর্থ নেই। এখন যেখানে আছি এ জায়গাও ছেড়ে চলে যেতে হবে। সেই মুহুর্তে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা।

 

আমার মতো এই আশ্রয়হীনের করুন কাহিনীর কথা শুনে তার নিজ অর্থায়নে আজ আমাকে টিনসেডের পাঁকা ঘর নির্মাণ করে দিয়ে মাথা গোঁজার ঠাই করে দিলেন। তার কাছে আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ।

 

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা বলেন, আমার ইউনিয়নের কোনো মানুষ অভাব অনটনে ও গৃহহীন হয়ে আছে শুনলে তাদের কষ্ট লাঘব ও গৃহ নির্মাণ করে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় ইতিপূর্বে আরও দুই অসহায় পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইটি টিনসেড পাকা ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, আল্লাহর রহমতে আমি যতোদিন বেঁচে থাকবো ততোদিন এ জনপদের সাধারণ মানুষের পাশে থাকবো।