আজ শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ই আশ্বিন ১৪৩১

কর্ণফুলীতে ৪ কিশোর গ্যাং সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক,আনোয়ারা : | প্রকাশের সময় : শনিবার ৫ নভেম্বর ২০২২ ০৪:৫৬:০০ অপরাহ্ন | দক্ষিণ চট্টগ্রাম

কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের খোয়াজনগর এলাকায় একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রহরী নামজুল হোসেন নাজুকে রামদা ও কিরিচ দিয়ে কোপানোর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে কর্ণফুলী থানায় আহত প্রহরী নাজমুল হোসেন নাজুর বাবা শেখ আহমদ বাদী হয়ে কিশোর গ্যাং লিডার ইমরান পাটোয়ারীসহ ৪ জনকে আসামীকে করে এ মামলা দায়ের করেন। ইমরান পাটোয়ারী (২৯) খোয়াজনগর ৪ নম্বর ওয়ার্ড বুরার গোষ্ঠির মৃত ছবির আহমদের পুত্র। মামলার অন্য আসামীরা হলেন- একই এলাকার মনির আহমদের পুত্র হৃদয় পাটোয়ারী (২৪) ও মো. তারেক পাটোয়ারী (২৮) এবং মো. আলাউদ্দিনের পুত্র মো. হাসান (২২)। এরা সকলে চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমদ রাজার অনুসারী বলেও জানান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা। এদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। মামলার এজাহা সূত্রে জানা যায়, বিন হাবিব লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চলাচলকে কেন্দ্র করে আসামীদের সঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রহরী নাজমুল হোসেন নাজুর সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এ ঘটনার জেরে ০২ নভেম্বর রাত সাড়ে দশটার দিকে ইমরান পাটোয়ারীর নেতৃত্বে হত্যার উদ্দেশ্যে নাজুর ওপর হামলা চালিয়ে রামদা দিয়ে ডান হাতের বাহুতে এবং কিরিচ দিয়ে পিঠের ডান পাশে কোপানো হয়। এ সময় নাজুর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে আসামীরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা গুরুত্বর আহত অবস্থায় নাজুকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমদ রাজার ছত্রছায়ায় ইমরান পাটোয়ারীর নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং এলাকায় জমি দখলসহ নানান অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। গত ১২ অক্টোবর তুচ্ছ ঘটনায়কে কেন্দ্র করে এ কিশোর গ্যাং খোয়াজনগর এলাকায় মো. ফয়সাল (২২) নামের এক যুবকের ওপর হামলা চালিয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুত্বর আহত করেন এবং তার স্ত্রী মনি আক্তারের শ্লীলতাহানী করেন। স্থানীয়রা গুরুত্বর আহত অবস্থায় ফয়সালকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় গত ১৫ অক্টোবর মনির আহমদের পুত্র হৃদয় পাটোয়ারী ও মো. আলা উদ্দিনের পুত্র মো. হাসানসহ ৬ জনকে আসামী করে কর্ণফুলী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। আহত নাজুর বাবা মামলার বাদী শেখ আহমদ বলেন কিশোর গ্যাং লিডার ইমরানের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। অহেতুক আমার নিরহী ছেলেটার ওপর হামলা চালিয়েছে। জানতে চাইলে কর্ণফুলী কিশোর ও যুব গ্যাং প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমদ বলেন, কর্ণফুলীতে কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোররা ব্যবহৃত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই থেকে শুরু করে খুনাখুনিসহ নানা অপরাধে কিশোর-তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে। এসব কিশোর গ্যাংয়ের শিকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারও কোথায় ভয়ে বিচারও চাইতে পারে না। এদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ বলেন, রামদা ও কিরিচ দিয়ে আঘাত করার ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রুজ হয়েছে। সবাইকে আইনের আওতায় এনে কিশোর গ্যাং র্নিমূল করা হবে।