চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী টোব্যাকো গেইট এলাকায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ পরিকল্পনা এবং নোটিশ জারির প্রতিবাদে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।
রবিবার সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে নানা শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার-পেস্টুনসহ আয়োজিত বিশাল মানববন্ধনে স্থানীয় ব্যবসায়ী ছাড়াও এলাকার শত শত সাধারণ নারী-পুরুষ যোগ দিয়ে উচ্ছেদ পরিকল্পনার প্রতিবাদ জানান।
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রদক্ষিণ করে।
আয়াজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, জনৈক মোহাম্মদ হোসেন নামে এক ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষায় নোটিশ জারি করেছে চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগ। শুধু একজনের স্বার্থে ট্যোবাকো গেইট এলাকায় যুগ যুগ ধরে ব্যবসা করে আসা ব্যবসায়ীদের দোকান উচ্ছেদ অমানবিক।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, উক্ত মোহাম্মদ হোসেন, ২০১৭ সালে জনৈক শাহ আলম চৌধুরীর কাছ থেকে দুই গন্ডা জমি কিনে (যা প্রকৃত পক্ষে কবরস্থান) সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বিভ্রান্ত করে ওই স্থানে প্রবেশের নামে ২৪ ফিট সওজ’র ভূমি লীজ নেয়। কিন্তু লীজ নেয়ার এক বছর পার হলেও সে তার লীজ নেয়া জায়গা বুঝে না নিয়ে ওই স্থানে যুগ যুগ ধরে থাকা লৌহজাত সামগ্রী, জাহাজের ফার্নিচার, দরজা ও অন্যান্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করে পুরো জমি নিজের দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, তারা এই জমি লীজ পাবার জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে আবেদন করেছে। যা প্রক্রিয়াধীন। মহাসড়ক প্রশস্ত করতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের যখন এই অব্যবহৃত জমি প্রয়োজন হবে, তখনই তারা ছেড়ে দেবে। কিন্তু ব্যক্তি বিশেষের স্বার্থে ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হলে তা হবে অন্যায় ও অমানবিক, যার দরূন ব্যবসায়ীরা পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে মরতে হবে।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সিটি গেইট থেকে কাঁচপুর ব্রীজ পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশের অব্যবহৃত জায়গা স্থানীয়রা যুগ যুগ ধরে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু এমন হাজার হাজার স্থাপনা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ না করে শুধুমাত্র ভাটিয়ারীর ট্যোবাকো গেইট এলাকার ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ পরিকল্পনা এখানকার ব্যাসায়ী ও সাধারণ মানুষের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এক ব্যক্তির হাতে সওজ’র জমি তুলে দেয়ার হীনস্বার্থে পুরনো ব্যবসায়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ পরিকল্পনা থেকে সরে আসার জন্য সরকারের সড়ক ও সেতু মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদের মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অন্যথায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ সহ বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, ভাটিয়ারী ফার্নিচার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো: মহিউদ্দিন, হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো: আমজাদ হোসেন, ফার্নিচার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য মোঃ পারভেজ, লৌহজাত সামগ্রী ব্যবসায়ী মো: দিদারুল আলম, তেল ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে মো: রাসেদ, ব্যবসায়ী মো: নবী সওদাগর, স্থানীয় মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: মনির, ক্রোকারিজ ব্যবসায়ী মো: তসলিম মিয়া, দরজা ব্যবসায়ী মো: জয়নাল, টোব্যাকো গেইট বাজার ব্যবসায়ী মো: রবি সওদাগর ও মো: মিন্টু এবং এলাকাবাসীর পক্ষে মো: খোরশেদ আলম প্রমুখ।