আজ রবিবার ৫ মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১

হৃদয় লড়লেন তবু হেরে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

খেলাধুলা ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : রবিবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:৩৩:০০ পূর্বাহ্ন | খেলাধুলা

বোলারদের নৈপুণ্যে শ্রীলঙ্কার রানটা নাগালের ভেতরেই রাখা সম্ভব হয়েছিল। বাংলাদেশের ব্যাটারদের দরকার ছিল শুধু দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে পার্টনারশিপ গড়ে ম্যাচটা নিজেদের করে নেওয়া। কিন্তু ভালো শুরুর পরও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারল না ব্যাটাররা। এক তাওহীদ হৃদয় চেষ্টা করলেন বটে কিন্তু তাতেও লাভ হলো না। কাছাকাছি এসেও টাইগাররা তীরে ভেড়াতে পারল না তরী। হেরে এশিয়া কাপ থেকে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ।

 

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২১ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। কলম্বোর রানাসিংহে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে এদিন বাংলাদেশ টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়। সাদিরা সামারাবিক্রমা ও কুশল মেন্ডিসের ব্যাটে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ভালো শুরুর পরও টানা উইকেট হারিয়ে ২৩৬ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। টাইগারদের হয়ে এদিন তাওহীদ হৃদয় লঙ্কানদের বিপক্ষে একাই লড়াই করেন। শেষ উইকেটে নাসুম আহমেদ ও মাহমুদ হাসান চেষ্টা করেছেন বটে, তাতে অবশ্য শুধু হারের ব্যবধানই কমেছে।

 

 

এশিয়া কাপের আগে শিরোপার স্বপ্ন দেখিয়ে দেশ ছেড়েছিল সাকিব আল হাসানের দল। কিন্তু এক আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি ছাড়া বাংলাদেশের ব্যাটাররা ব্যর্থ হয়েছেন প্রতিটি ম্যাচেই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও দেখা গেল তারই পুনরাবৃত্তি। লঙ্কান স্পিনারদের সামলাতেই পারেননি টাইগাররা। শুধু দাসুন শানাকা ও মহেশ তিকসানার বলে উইকেট বিসর্জন দিয়ে ফিরেছেন ছয় বাংলাদেশি ব্যাটার। 

 

মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যর্থ লিটন দাস, অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। ফলে বাগে পেয়েও লঙ্কানদের বধ করা হলো না। সুপার ফোরে টানা দুই ম্যাচ হেরে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে টাইগাররা। অলৌকিক কিছু না ঘটলে ভারতের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটা এখন শুধুই আনুষ্ঠানিকতার।

 

এদিন আগে ব্যাট করতে নেমে লঙ্কানরা খুব ভালো করছিল এমনও না। দলীয় ৩৪ রানে দিমুথ করুনারত্নের (১৮) উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ১০৮ রানের মাথায় আরেক ওপেনার পাত্তুম নিশঙ্কাও (৪০) বিদায় নেন। অর্ধশতক পূর্ণ করে কুশল মেন্ডিসও বিদায় নেন ১১৭ রানের মাথায়। ৭৩ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে ঠিক ৫০ রান করেন তিনি।

 

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা লঙ্কানরা ১৪৪ রানে আশালাঙ্কা (১০) ও ১৬৪ রানে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে হারায়।

 

তবে অন্যদিকে ততক্ষণে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছেন সামারাবিক্রমা। তার সঙ্গে এ সময় জুটি করেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। দুজনের জুটিতে ৬০ রান যোগ হয়। বিপজ্জনক হয়ে উঠতে থাকা শানাকা ৩২ বলে ২৪ রান করে বিদায় নেন। শেষ পর্যন্ত স্মারাবিক্রমার ব্যাটে ভর করে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান করে শ্রীলঙ্কা। সামারাবিক্রমা ৭২ বলে ৮ চার ও ২ ছয়ে ৯৩ রান করেন।

 

জবাবে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ভালো শুরু পায় নাঈম শেখ ও মেহেদী হাসান মিরাজের ওপেনিং জুটিতে। ১১ ওভারে ৫৫ রান যোগ হয় এই জুটিতে। এরপর ২৯ বলে ২৮ রান করা মিরাজ ফেরেন শানাকার বলে ক্যাচ দিয়ে। তবে ৬০ থেকে ৮৩ রানে পৌঁছাতেই আরও ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে টাইগাররা। নাঈম শেখ ৪৬ বলে ২১, সাকিব আল হাসান ৭ বলে ৩ ও লিটন দাস ২৪ বলে ১৫ রান করে ফেরেন।

 

পঞ্চম উইকেট জুটিতে তাওহীদ হৃদয় ও মুশফিকুর রহিম ৭৩ রান যোগ করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরায়। কিন্তু দায়িত্বহীনের শটে উইকেট বিসর্জন দিয়ে টাইগারের বিপদে ফেলেন মুশফিক (২৯)। এরপর ফের ধ্বস নামে বাংলাদেশের ইনিংসে। একদিকে তাওহীদ হৃদয় দায়িত্ব নিয়ে খেললেও ফেরেন শামীম পাটোয়ারী (৫)। দলীয় ১৯৭ রানে তিকসানা হৃদয়কে ফেরালে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। ৯৭ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে ৮২ রান করেন হৃদয়।

 

শেষ উইকেট জুটিতে ২০ রান যোগ করে টিমটিম করে আশার বাতি জ্বালাচ্ছিলেন নাসুম-হাসান। কিন্তু ৪৯তম ওভারের প্রথম বলে নাসুম বোল্ড হলে ২১ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ।

 

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে  দাসুন শানাকা ৯ ওভারে ২৮ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন। মহেশ তিকসানা ও মাতিশা পাথিরানাও যথাক্রমে ৯ ওভারে ৬৯ ও ৫৮ রান দিয়ে দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন। বাকি উইকেটটি শিকার করেন দুনিথ ওয়াল্লাগে।