কৃষকের স্বপ্ন গবাদিপশু লালন পালন করে স্বাবলম্বী হবে।তাই বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গরু ক্রয় করে লালন পালন করছে।এ গবাদি পশুর দুধ বিক্রি করে সংসার চালাই কৃষক আবদুল মালেক(৬০)। তিনি এ গবাদি পশু লালন পালনের পাশাপাশি কৃষি কাজেও জড়িত।দিনমজুর দরিদ্র এ কৃষক সংসার চালাতে হিমশিম খেত।এ বর্ষার মৌসুমে জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরে স্ত্রী দুই মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে বসবাস করছে।তারপরেও ঘরের কোন মেরামত করেনি। শুধু গবাদি পশু গুলোকে যত্ন সহকারে লালন পালন করছে। প্রতিদিনের ন্যায় রাতে পাচঁটি গবাদি পশুর সাথে কুরবানী করার জন্য আরো দুইটি ক্রয় করা গরুকে রাতে খাবার দিয়ে ঘরে চলে যায়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বিদ্যুৎ সর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘরমটে গবাদি পশুর টিনসেট ঘর সম্পুর্ন পুড়ে যায়।এরই মধ্যে গোয়াল ঘরে থাকা ৭টি গবাদি পশুর পাচঁটি গরু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়লে কৃষক পরিবার হাটহাজারী ফায়ার সার্ভিসকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলেও রিসিভ করেননি,পরে জরুরী সেবা ৯৯৯ নাম্বারে কল দিয়েও কোন সুরাহা পাইনি বলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবদুল মালেক জানান। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড হেলাল চৌধুরী পাড়ার খলিলুর রহমান মুন্সির নতুন বাড়ি ।পুড়ে যাওয়া গরুর মুল্য প্রায় ১২লক্ষ টাকা বলে দাবি করেন মালেক।যা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন তিনি।
এ সময় সরেজমিনে ঘটনাস্থলে প্রতিবেদককে কান্না জড়িত কন্ঠে কৃষক আবদুল মালেক বলেন,আমার সব শেষ, আমি এখন পথের ফকির, কিভাবে আমি এতগুলো ঋণ পরিশোধ করব,কার কাছে হাত পাতবো,আমার এই অভাবী সংসার কিভাবে চালাবো।কেন এমন হলো?এভাবে কান্না জড়িত কন্ঠে প্রতিবেদককে কথাগুলো বলেন তিনি।তিনি অভিযোগ করেন,বিদ্যুৎ শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটলে সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসকে ফোন দিলে তারা রিসিভ করেনি।নিরুপায় হয়ে জরুরী সেবা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করলেও কোন সহযোগিতা পায়নি।আমি আমার পরিবার কি ভাবে চলবো এটা বলতে বলেতে আবদুল মালেক বার বার মোর্চা যাচ্ছেন।
এ ঘটনার পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার,ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা পরিদর্শন করেন।
হাটহাজারী ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র ষ্টেশন কর্মকতা আবদুল মান্নান জানান, রাতে গোয়াল ঘরে আগুন লাগার সংবাদ পাই।তাৎক্ষণিকভাবে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই কৃষকের গরুগুলো পুড়ে শেষ।প্রাথমিক ধারনা করা হচ্ছে বিদ্যুৎ সর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত ঘটে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মসিউজ্জামান প্রতিবেদককে জানান,বিষয়টি জানার পরে ঘটনাস্থলে গিয়েছি।কৃষকের সাথে কথা বলেছি।খুবই মর্মাহত আমরা। এ পরিবারটি আগের মত যেন ফিরে আসতে পারে উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা করবে।সাথে সাথে বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরত কর্মকর্তাদেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।