চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে গত শনিবারের অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ৬ দিন পর গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে সেখানে কাজ পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ফায়ার সার্ভিস। তবে যন্ত্রপাতি গুছিয়ে তারা ফিরে গেছেন দুপুরের পর। অন্যদিকে এর আগের রাতে (বুধবার) বিএম ডিপো এখন নিরাপদ দাবি করে ফিরে যায় সেখানে উদ্ধার কাজে থাকা সেনা সদস্যরাও।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন সিকদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখানে অন্তত ২০টি কন্টেইনার আছে উঁচুতে। সেগুলো উপর থেকে নামিয়ে তারপর ঠান্ডা করে ডাম্পিং করতে হবে। আমরা যত পানি দিই সব পানি এসব কন্টেইনারের উপর দিয়ে চলে যায়। এগুলো নামিয়ে দিলে আমরা ভেতরে পানি দিয়ে নেভাতে পারতাম। বিএম ডিপোর একটি ক্রেন আছে সেটিও নষ্ট। কাজের জন্য আমরা বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষের কাছে কন্টেইনার সরানোর উপযুক্ত দুটি বড় ক্রেন চেয়েছিলাম। না থাকলে বন্দর থেকে ভাড়া নিয়ে দেবার জন্য অনুরোধ করি। শুধুমাত্র সেই ক্রেনগুলোর অভাবে আমরা গত কয়েকদিন ধরে সবগুলো কন্টেইনার নামিয়ে ঠান্ডা করে ডাম্পিং করতে পারিনি। বিএম কর্তৃপক্ষ আমাদের এ ব্যাপারে কোন প্রকার সহযোগিতা করেনি।
তিনি আরও বলেন, এখানে গার্মেন্টস পণ্য আছে, তামাক আছে। আরো অনেক রকম দ্রব্য ছিলো। কিন্তু পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিলো না। এখানে অগ্নি নির্বাপণের জন্য পানির ব্যবস্থাও ছিলো না। আমরা আশপাশের মানুষের নানান কথা শুনেও ৬-৭টি পুকুরের পানি সেচে ফেলেছি। এ কয়েকদিন আগুন ছিলো না। ধোঁয়া আছে। সব কন্টেইনারের ভেতরেই গার্মেন্টস পণ্য আছে। এসব পণ্যে পুড়ে পুড়ে ধোঁয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার আমাদের (ফায়ার সার্ভিসের) মহাপরিচালক এখানে অগ্নিকা-ের অবস্থা জানতে চাইলে আমরা বলেছি এখানে দৃশ্যমান আগুন নেই, ধোঁয়া আছে। তিনি সব শুনে আমাদেরও কাজ পরিত্যক্ত করে ফিরে যাবার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আমরা সেখান থেকে সব ইউনিট ফিরিয়ে এনেছি। এখনো যতটুকু ধোঁয়া আছে তা কারখানা কর্তৃপক্ষকে স্থানীয় বা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নেভাতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কারখানা থেকে যাওয়ার সময় সাংবাদিক সম্মেলনে সীতাকু- ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার নুরুল আলম দুলাল বলেন , এই আগুন নেভাতে ১৮টি স্টেশানের ৩২টি ইউনিট সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে ৯ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ মোট ৪৬ জনের মৃত্যু হয়।