বর্তমানে রেস্টুরেন্টগুলোতে ফাস্টফুড খাওয়া এক ধরনের ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে—যা কিনা শিশুদের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স অন মেটার্নাল অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট নিউট্রিশন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
শিশুদের খাদ্যের বিষয়ে সতর্ক করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন,
বাচ্চাদের যেসব ফাস্টফুড খাওয়ানো হয় তাতে বাচ্চারা মোটা হয়ে যাচ্ছে। ওজন বাড়ছে। এজন্য বাচ্চাদের ব্লাড প্রেশার বাড়ছে, ডায়াবেটিস হচ্ছে। এখনও সময় আছে আমাদের এসব থেকে বাচ্চাদের দূরে রাখতে হবে। তাদের দিকে নজর দিতে হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘শিশুরা যেহেতু আমাদের ভবিষ্যৎ, তাদের ফাস্টফুডের বিপরীতে ব্যালেন্স ফুড খাওয়ানো দরকার। শুধু তাই নয়, তাদের ব্যালেন্স ফুডে অভ্যস্ত করা দরকার। সব মিলিয়ে বড় একটা সচেতনতা তৈরি করা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘একটা সময় আমাদের ৪০-৫০ শতাংশের মতো ম্যালনিউট্রিশন ছিল, যা বর্তমানে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। চিকিৎসার পাশাপাশি খাদ্যটাও গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সব ধরনের খাবারই খেতে হবে। বিশেষ করে খাবারটা পুষ্টিকর হতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘নিউট্রিশনের অভাব হলে আমরা জানি স্টান্টিং বেড়ে যায়। এখনও ২০ শতাংশের বেশি আমাদের দেশে মেন্টাল-ফিজিক্যাল সক্ষমতা কমে যায়। পাশাপাশি দেহের ইমিউনিটির ওপর প্রভাব পড়ে। খাদ্যটা যদি সুষম না হয়, তাহলে কিন্তু অসুখ-বিসুখ বাড়ে। ফলে আমাদের হেলথ সেক্টরেও একটা প্রভাব পড়ে।’
মাতৃ-শিশু মৃত্যুর হার কমে এসেছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন,
আমাদের দেশে মাতৃ-শিশু মৃত্যুর হার কমে এসেছে। একটা সময়ে গড়ে ৬০০ জনের মতো মৃত্যু হতো, বর্তমানে ১৬০ জনে চলে এসেছে। দেশের স্বাস্থ্যসেবা ভালো হয়েছে বলেই মৃত্যু কমে এসেছে। তবে আমাদের আরও ভালো করার সুযোগ আছে। এসডিজি অর্জন করতে হলে মাতৃমৃত্যু ৭০ জনে নামিয়ে আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমাদের দেশে ফল, শাক-সবজি, মাছসহ সব ধরনের খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে। সুতরাং সুষম খাবারে সবাইকে গুরুত্ব দিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলমসহ আরও অনেকে।