কুতুবদিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রবাহমান ওলুখালী খাল ভরাট করে জবর দখলের পাঁয়তারা চলছে।
গত কয়েকদিন ধরে ধূরুং বাজারের উত্তর পাশে আজম সড়কের কালভার্ট সংলগ্ন প্রাচীন খালটি ভরাটের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে খালের একাংশ। যেন খাল কেটে কুমির আনা হচ্ছে।
উত্তর ধুরুং ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল হালিম সিকদারের নেতৃত্বে পরিবেশ বিধ্বংসী এ কাজ চলছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে।
সরজমিন দেখা গেছে, দুইটি স্ক্যাভেটর দিয়ে মাটি কেটে দিনরাত খাল ভরাটের কাজ চলছে। এর আগে বেরিবাঁধ থেকেও ট্রাকযোগ আনা হয়েছে মাটি। যার কারণে নির্দ্বিধায় প্রবাহমান একটি খালে পানি চলাচলের পথ ছোট হয়ে যাচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, চেয়ারম্যানের দেখানো পথে যে যার মতো দখল করে রেখেছেন খালটি। এর আগেও তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে খালসহ সরকারি খাস জমি দখল করেন। দখলকৃত সেইসব জায়গায় গড়ে তুলেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উত্তর ধূরুং ও দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নের সিমান্তবর্তী খালটি, পশ্চিমে উত্তর ধূরুং ইউনিয়নের আমিরার পাড়া, দক্ষিণ ধূরুং অলি পাড়া থেকে প্রদিপ পাড়া হয়ে পিলটকাটা খালে সংযুক্ত হয়েছে। একসময় খালটি খরস্রোতা ছিল। নৌকা দিয়ে লবণসহ বিভিন্ন মালামাল আনা-নেওয়া করা হতো এই খাল দিয়ে। এখন খালটি দখল-বেদখলে মৃত প্রায়। বাজারের ময়লা পানি আর দখল দূষণের ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুতুবদিয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, উত্তর ধুরুং ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল হালিমের বিরুদ্ধে খাল দখলের অভিযোগটি সত্য। আমরা কুতুবদিয়া বাপার নেতৃবৃন্দ তার সাথে কথা বলে সেখান থেকে সরে আসতে বলেছি। তিনি স্থানীয় প্রশাসনের প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন। খাল দখল থেকে সরে না আসলে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলনে যাবো।
স্থানীয় সাংবাদিক কাইছার সিকদার বলেন, প্রতিনিয়ত কুতুবদিয়ার সব জায়গায় প্রভাবশালীদের দ্বারা খালসহ সরকারি জমি দখল হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে এক সময় পানি নিষ্কাশন বিঘ্নিত হয়ে জ্বলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে মানুষের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি ডুবে যাবে, লবণ উৎপাদন ব্যাহত হবে। গুরুত্বপূর্ণ খালগুলোর দখলদারিত্ব বন্ধ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
খাল দখলের বিষয়ে উত্তর ধুরুং ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল হালিম সিকদার বলেন, আমি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে খালে মাটি ভরাট করছি। নিজের পকেটের টাকা খরচ যাত্রী ছাউনি তৈরি করবো। সেখানে একটি সীমানা গেইট থাকবে। উপজেলা সিটিজেন পার্কের মতো করে সৌন্দর্য বৃদ্ধির করবো। পরে প্রকল্প দিয়ে সেই খরচ মেনেজ করার কথা জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জর্জ মিত্র চাকমা বলেন, একজন চেয়ারম্যান কেন খাল ভরাট করবে, খোঁজ নিয়েপ্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন, কোন একটা পরিত্যক্ত জায়গা থেকে মাটি এনে পরিষদের জন্য কিছু একটা করা হচ্ছে জানতাম। আমি স্পটে না গেলেও এমনটা শুনেছি। খাল ভরাটের বিষয়ে অবগত নই। তবে বিষয়টি আমার সময়ের না, আগের।
তিনি বলেন, ওখানে সড়কে জ্যাম হয়। গাড়ি, টার্মিনাল ইত্যাদির জন্য হয়তো কিছু একটা হতে পারে। তবু আমি বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি।