রামু জোয়ারিয়ানালা নন্দাখালী মুরা পাড়া এলাকায় আপন পিতা, মাতা, ভাই, ভাবি, ভাতিজাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি রফিক উদ্দিনের বিরুদ্ধে পৃথক ধারায় ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সাজার মধ্যে পেনাল কোডের ৩২৬ ধারায় ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, পেনাল কোডের ৩২৪ ধারায় ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ডসহ ৫ হাজার অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং পেনাল কোডের ৩০৭ ধারায় ৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ডসহ ১০ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়।
একটানা ৩দিন সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কৌশিক আহাম্মদ খোন্দকার এই রায় প্রদান করেছেন। সাজাপ্রাপ্ত রফিক উদ্দিনের স্ত্রী শাহেনা আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।
রফিক উদ্দিন জোয়ারিয়ানালা ৩ নং ওয়ার্ডের নন্দাখালী মুরা পাড়ার অলি আহাম্মদের ছেলে। এ সময় ২ আসামি আালতে হাজির ছিলেন। মাত্র ৩ দিনে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আলোচিত একটি মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বিচারক।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৩ আগষ্ট নিজ বসতঘরে পূর্বপরিকল্পনা মতে প্রথমে পিতা অলি আহাম্মদ (৮৭), তারপর গর্ভধারিণী মা আলিমুন্নেছা (৭২), সহোদর প্রবাসী ভাই গিয়াস উদ্দিন এর স্ত্রী শাহিনা আক্তার (৩০), আপন দুই ভাতিজা আরিয়ান (৫) ও হাসান (২) কে একেএকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি কুপাঘাত করে রফিক উদ্দিন। এতে তারা মারাত্মক আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেকদিন তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এ ঘটনায় ভিকটিম শাহিনার পিতা বাদী হয়ে রামু থানায় মামলা করেন। যার মামলা নং- জি আর ৪৪০/২০২১। মামলা তদন্ত করে আসামি রফিক উদ্দিন ও তার স্ত্রী শাহেনা আক্তারের বিরুদ্ধে চার্জসিট দাখিল করেন এস আই কামরুল ইসলাম। মামলাটি বিচারের জন্য বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহাম্মদ খোন্দকার এর আদালতে প্রেরণ করেন বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। বিগত ৮ ফেব্রুয়ারি আসামি রফিক উদ্দিন এবং তার স্ত্রী শাহেনা আক্তার এর উপস্থিতিতে চার্জ গঠন হয়।
ঘটনার মর্মান্তিকতা বিবেচনায় মামলাটি বিজ্ঞ বিচারক দ্রুত নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নেন বিচারক। একটানা পরের ৩ কর্মদিবস তথা ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন। আসামি রফিক উদ্দিন আদালতে দোষ স্বীকার এবং নিজেই নিজের বিচার প্রার্থনা করেন।
উল্লেখ্য যে, একই আদালত বিগত ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর জিআর ৩৪০/২২ (চকরিয়া) মামলাটি মাত্র ৪ কার্য দিবসে নিষ্পত্তি করেছিলেন।
যে কোন মামলা এভাবে দ্রুত নিষ্পত্তি হলে আইনি জটিলতা কমবে। পাশাপাশি সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম। মর্মান্তিক ঘটনায় আলোচিত মামলাটি মাত্র ৩ কার্যদিবসে নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হওয়ায় তিনি বিচারককে ধন্যবাদ জানান।