আজ রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

রোজা শুরু হবে মার্চে

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : বুধবার ৪ জানুয়ারী ২০২৩ ০৯:৩৪:০০ অপরাহ্ন | ধর্ম

২০২৩ সালে রোজা শুরুর সম্ভাব্য তারিখ জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ বছরের পবিত্র রমজান ২৩ মার্চ থেকে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ ২১ এপ্রিল। বুধবার (৪ জানুয়ারি) দেশটির জাতীয় দৈনিক খালিজ টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

 

খালিজ টাইমস জানিয়েছে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের প্রতিষ্ঠান এমিরেটস অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির হিসেব-নিকেশ অনুযায়ী, আগামী ২৩ মার্চ থেকে রমজান মাস শুরু হতে পারে। আর এবার রমজান মাস ২৯ দিনে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে অনুযায়ী আগামী ২১ এপ্রিল পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে।

 

উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে দিন, মাস ও বছর গণনার দুটি পদ্ধতি—সৌর পদ্ধতি ও চন্দ্র পদ্ধতি। সূর্যের গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করে তৈরি পঞ্জিকাকে বলা হয় সৌর পঞ্জিকা এবং চাঁদের গতিবিধি হিসেব করে তৈরি পঞ্জিকাকে বলা হয় চন্দ্র পঞ্জিকা। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ সৌর পঞ্জিকা অনুসরণ করলেও মধ্যপ্রাচ্যের আরবি ভাষাভাষী দেশগুলো চন্দ্র পঞ্জিকা মেনে চলে।

 

আরবি পঞ্জিকার নবম মাস হলো রমজান, যাকে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র মাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই মাসের শেষেই আসে মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর।

 

প্রাপ্তবয়স্ক ও সুস্থ প্রত্যেক মুসলমানের ওপর রমজানের রোজা রাখা ফরজ। ইচ্ছাকৃত রমজানের রোজা ত্যাগ করা কবিরা গুনাহ বা জঘন্য পাপ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো (গ্রহণযোগ্য) কারণ বা অসুস্থতা ছাড়া রমজানের একটি রোজা ভাঙে, তার ওই রোজার বিপরীতে সারা জীবনের রোজাও রমজানের একটি রোজার সমমর্যাদাসম্পন্ন ও তার স্থলাভিষিক্ত হবে না। ’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৭২৩)

 

তবে অসুস্থতা বা ইসলামী শরিয়ত অনুমোদিত অন্য কোনো কারণে রোজা রাখতে না পারলে তার প্রতিবিধান রয়েছে।

 

তাদের ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে যে এই মাস পাবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। আর কেউ অসুস্থ থাকলে বা সফরে থাকলে, সে অন্য সময় এই সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান, তোমাদের জন্য যা কষ্টকর তা চান না। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)

 

 

কাজা আদায়ের বিধান

 

রোজা ফরজ এমন ব্যক্তি যদি ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় অথবা কোনো অসুস্থতা, সফর ও ঋতুবতী হওয়ার মতো কারণে রোজা ভঙ্গ করে তার জন্য ছুটে যাওয়া রোজার সমপরিমাণ রোজা কাজা করা আবশ্যক। এই ব্যাপারে সব ইমাম একমত। কেননা আল্লাহ পরবর্তীতে (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৪-১৮৫) সংখ্যা পূরণ করতে বলেছেন। হাদিসে এসেছে, এক নারী আয়েশা (রা.)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করল, ঋতুমতী নারী যখন ঋতু থেকে পবিত্র হয়, তখন কি সে নামাজ কাজা করবে? তিনি বললেন, তুমি কি হারুরি গোত্রের নারী? আমরা তো রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে ঋতুমতী হতাম এবং যখন পবিত্র হতাম, তখন আমাদের রোজা কাজা করার নির্দেশ দেওয়া হতো কিন্তু সালাত কাজা করার নির্দেশ দেওয়া হতো না। ’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৩১৮) যে ব্যক্তি শরিয়ত অনুমোদিত কারণ ছাড়া রোজা ভাঙবে তাকে কাজা আদায়ের সঙ্গে সঙ্গে কাফফারাও দিতে হবে। তা হলো, দাস মুক্ত করা; সেটা না পারলে লাগাতার দুই মাস রোজা রাখা; সেটা না পারলে ৬০ জন মিসকিনকে খাবার দান করা।

 

 

 

কাজা আদায়ের সময়

 

পরবর্তী রমজান মাস আসার আগে যতটা দ্রুত রমজানের রোজার কাজা আদায় করতে হবে। বিনা কারণে কাজা আদায়ে বিলম্ব করা মাকরুহ বা অপছন্দনীয়। কারো ওপর যদি রমজানের রোজা কাজা থাকে, তবে সে তা আদায় করবে। অতঃপর শাওয়ালের ছয় রোজার মতো অন্যান্য নফল রোজা আদায় করবে। কাজা আদায় না করে অন্য কোনো নফল আদায় করলেও তা শুদ্ধ হয়ে যাবে—যদিও তা অনুচিত হবে। বছরের যেকোনো দিন রমজানের রোজার কাজা আদায় করা যায়, তবে ঈদের দিনের মতো নিষিদ্ধ দিন, পরবর্তী কোনো রমজান ও মান্নাতের রোজার জন্য নির্ধারিত দিনে তা আদায় করা যাবে না।

 

সূত্র : আল-ফিকহুল ইসলামী ওয়া

 

আদিল্লাতুহু : ৩/১০৭-১১৩