কয়েকদিনের টানা বর্ষণে কর্ণফুলী নদীতে বেড়েছে তীব্র স্রোত। এতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ও বেতাগী ইউনিয়নে কর্ণফুলীর দুই পাড়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন। ইতিমধ্যে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে সহস্রাধিক মানুষের ঘরবাড়ি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও জমি। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এসব গ্রামের মানুষ। ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্লক স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, চলমান বৃষ্টিতে কর্ণফুলীর তীব্র স্রোতে বেতাগী ইউনিয়নের কাউখালী, কাঙ্গালি শাহ্ মাজার সংলগ্ন এলাকা, হাজী ইদ্রিছ মিয়ার ঘাট, মাতব্বর বাড়ি, চিরিয়া, মৌলভী সাহেবের ঘাট, চান্দরবাড়ি, বড়ুয়াপাড়া, কুলালপাড়া, কাটাখালী, গোলাম বেপারী হাট, বশর মাস্টার বাড়ি এলাকাসহ বিভিন্ন স্পটে তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে সরফভাটা ইউনিয়নের পশ্চিম সরফভাটা মৌলানা গ্রাম থেকে পুরাতন সিকদার হাট পর্যন্ত ৫০০ মিটারেরও অধিক এলাকা। এই বর্ষাতেই এসব এলাকার বেশ কিছু ঘরবাড়ি-ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অন্য কোথাও যাওয়ার উপায় না পেয়ে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড়ের বসতঘরেই থাকছেন।
বেতাগী ইউনিয়নের কাউখালি গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, বেশ কয়েকবছর ধরেই ভাঙনে ফসলি জমি হারিয়েছি। গেল বর্ষায় বসতঘরও ভাঙনের কবলে পড়ে। এতে বসতভিটার সামনে কয়েকটি কক্ষ ভেঙে যায়। অন্যত্র যাওয়ার জায়গা না থাকায় পিছনের কক্ষগুলোতেই আমরা থাকছি। এই বর্ষায় তাও ভেঙে যাচ্ছে। বেতাগী ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল আলম জানান, ভৌগলিক কারণে বেতাগী ইউনিয়নের তিনদিকেই কর্ণফুলী নদী। বর্ষা এলেই নদীর তীব্র স্রোতে ভাঙন দেখা দেয় । ইতিমধ্যেই বেশ কিছু এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধক ব্লক স্থাপন হয়েছে। চলমান ভাঙন ঠেকাতে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এম পি বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
আশাকরি দ্রুততম সময়ে ভাঙন প্রতিরোধ ব্লক স্থাপন করে সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘব হবে। সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন,একসময় বর্ষা এলেই রাঙ্গুনিয়ার কর্ণফুলীর দুই পাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে নদী ভাঙনের হাহাকার দেখা যেতো। এখন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের হাত ধরে ৩৯৮ কোটি টাকার বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় চন্দ্রঘোনা থেকে বেতাগী ইউনিয়নে কর্ণফুলীর দুই পাড়ে ব্লক স্থাপন হয়েছে। এরমধ্যে যেসব এলাকায় এখনো ব্লক স্থাপন বাকী রয়েছে তারমধ্যে সরফভাটা মৌলানা গ্রাম থেকে সিকদার হাট পর্যন্ত এলাকা অন্যতম। ভাঙন প্রতিরোধে এই গ্রামেও প্রজেক্ট নেয়া হয়েছে। আশাকরি ভবিষ্যতে নদী ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হবে।