আজ শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হাটহাজারীতে বাস-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৭

মাহমুদ আল আজাদ হাটহাজারী : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ৭ নভেম্বর ২০২৩ ০১:০৮:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

হাটহাজারীতে স্বরণকালের ভয়রাবহ সড়ক দুর্ঘটনায় বাস সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের দুই জমজ ভাই সহ ৭ জন নিহত ও বাপ্পা নামের একজন গুরুতর আহত হয়েছে। মঙ্গলবার(৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম নাজিরহাট খাগড়াছড়ি মহাসড়কের মির্জাপুর ইউনিয়নস্থ চারিয়া ইজতেমা মাঠ সংলগ্ন সড়কে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে তিন শিশু সহ ৭জন জন মারা যায়। বাস ও সিএনজি দুমড়ে মুচড়ে যায়। নিহত সকলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাজির পাড়া সাতবাড়িয়া ধনী পাড়া এলাকার বাসিন্দা।তবে বাস চালক ও হেলপার পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে। চন্দনাইশ থেকে পরিাবার নিয়ে ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভান্ডার বণিকপাড়া এলাকায় বেড়াতে যাচ্ছে তারা।

নিহতরা হলেন, ১.দ্বীপ(৪) ২.দিগন্ত (৪) (জমজ ভাই) ৩.বর্ষা দাশ( ১০) ৪.শ্রাবন্তী দাশ(১৭),উভয় পিতা নারায়ন দাশ ৫ রিতা দাশ(৩৫) স্বামী- নারায়ন দাশ, ৬.বিপ্লব দাশ(২২) পিতা সম্ভু দাশ ৭.চিনু বালা দাশ(৫০) স্বামী সচিন্দ্র দাশ।আহত বাপ্পা (৩২) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন,তার অবস্থাও সংকটাপন্ন।

সরেজমিনে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মুখি খাগড়াছড়ি থেকে পদক্ষেপ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস (চট্টমেট্রো-ব-১১-১৮০৮ দ্রুত গতিতে চারিয়া ইজতেমা মাঠ এলাকা আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী সিএনজি অটোরিকশা(চট্টগ্রাম থ-১৩-০২১৮) মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের ৫জন সহ মোট ৭জন নিহত হয়।এতে দুইজন জমজ শিশুসহ মারা যায়। নিহতের আত্মীয় রিমনের সাথে কথা বললে সে জানায়,চন্দনাইশ উপজেলার সাতবাড়িয়া থেকে ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভান্ডার দরবার শাহনগর গ্রামের বণিক পাড়ায় বেড়াতে আসছে পরিবার নিয়ে। চারিয়া ইজতেমা মাঠ এলাকায় ভয়াবহ এ দূর্ঘটনায় তরতাজা ৭টি প্রাণ কেড়ে নেয় ঘাতক বাস। এসময় দূরপাল্লার যানবাহনের তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।খবর পেয়ে দ্রুত হাটহাজারী ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট, হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, মডেল থানার ওসির নেতৃত্বে একটি টিম, নাজিরহাট হাইওয়ে,উপজেলা প্রশাসন, র‍্যাবের একটি টিম ঘটনাস্থলে আসেন। দীর্ঘ দুই ঘন্টা পর্যন্ত যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে এ বাহীনীর সদস্যরা কাজ করতে দেখা যায়।প্রায় হাজারের কাছাকাছি উৎসুক জনতা ভীড় জমিয়েছে। তবে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা সেখানে ঘটেনি।ফায়ার সার্ভিসের টিম সহ থানা পুলিশ মরদেহগুলি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।ঘটনাস্থলে অনেকেই গণমাধ্যম কর্মীদেরকে আক্ষেপ করে বলেন,মহাসড়কে তিন লাইনে উন্নতি করা হলেও ডিভাইডার না থাকায় প্রতি নিয়ত এরকম সড়ক দূর্ঘটনা ঘটছে। 

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স এর স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন আমরা খবর পেয়ে একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি।এখানে আসার পর আমরা কাউকে আহত অবস্থায় পায়নি সাতজনের লাশ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেছি।আমরা আমাদের কার্যক্রমে সবার লাশ উদ্ধার করে থানায় দিয়ে দিয়েছি।

জানতে চাইলে নাজিরহাট হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আদিল মাহমুদ বলেন ঘটনাটি খুব মর্মান্তিক।আমরা ঘঠনস্থলে এসে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করে আমরা মডেল থানায় নিয়ে যাচ্ছি।তাদের পরিবার আত্মীয়-স্বজনের সাথে কথা বলে আইনানুগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।তবে বাসের চালক ও হেলপার কাউকে পলাতক থাকার কারনে আটক করা হয়নি।অতিদ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

উল্লেখ্যঃ বিগত ১২/১৩ বছর পূর্বে একই মহাসড়কে মুন্সির মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় একই পরিবারের ১৫জন নিহত হয়েছিল।