আজ শনিবার ৪ মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১

হাটহাজারীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত,জনদুর্ভোগ চরমে,ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

মাহমুদ আল আজাদ হাটহাজারী : | প্রকাশের সময় : রবিবার ৬ অগাস্ট ২০২৩ ১০:২৩:০০ অপরাহ্ন | দেশ প্রান্তর

হাটহাজারীতে টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। অবিরাম বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। উপজেলার মেখল, উত্তর মাদার্শা, দক্ষিণ মাদার্শা, ধলই ইউনিয়ন এবং হাটহাজারী পৌরসভার আদর্শগ্রাম,মিরেরখীল সহ কিছু কিছু এলাকা আংশিক প্লাবিত হলেও রবিবার,মেখল, ছিপাতলী নাঙ্গলমোড়া ও গুমানমর্দ্দন ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এদিকে হালদার স্লুইচগেট সংস্কার না করায় মেখল ইউনিয়ন তলিয়ে গেছে। অমাবস্যার তিতির জোয়াড়ে হালদা নদীর পানিতে দুই ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। অংকুরিঘোনা বেড়িবাঁধের চেংখালী স্লুইচগেট সংস্কার না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি বলে স্থানীয়রা জানান। গত ৮০-দশকে হালদার বেড়িবাঁধের উপর নির্মিত চেংখালি খালের স্লুইচগেট ২০২২সালের জানুয়ারী মাসে ধসে পড়ে। এরপরেই দুপাশ থেকে মাটি সরে গেলে বেড়িবাঁধটি ভেঙে জনদুর্ভোগ বেড়ে যায় এলাকাবাসীর। তলিয়ে গেছে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো।  ইউপি পরিষদের কার্যালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, স্কুল, মাদ্রাসাসহ পানিতে থৈ থৈ করছে ঘরবাড়ি। এতে চরম দূর্ভোগে পড়েছে পানিবন্দি মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। 

 

এদিকে কৃষি জমি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে আউশ, আমন ধানের চারা ও বিভিন্ন শাকসবজি খেত। ভেসে গেছে শতাধিক মৎস্য খামার ও পুকুর। পানির কারণে ক্ষতি হয়েছে পোল্ট্রি খামারির। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে গতবারের মত নতুন করে প্লাবিত হতে পারে হাটহাজারী পৌর সদরের কিছু এলাকাসহ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল।

 

বন্যার পরিস্থিতি সম্পর্কে হালদা নদী সংলগ্ন এলাকার একাধিক মানুষ বলেন,সকাল থেকেই পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট, পরিষদ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্কুল,পানি ডুকেছে। তিনি বলেন একদিকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল, অনবরত বৃষ্টি অপরদিকে হালদা নদীর মূল বেঁড়িবাধের একটি কালভার্ট হয়ে হালদা নদীর পানি ঢুকে পুরো এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। স্কুল মাদ্রাসার পাঠদান বন্ধসহ যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ। অতি প্রয়োজনে নৌকাই একমাত্র মাধ্যম। তবে হালদায় বর্ষার আগে বিভিন্ন খাল খননের কারণে এবার গতবারের চেয়ে বন্যা, জলাবদ্ধতা অনেকাংশে কম।

 

শুক্রবার বার থেকে পাহাড়ি ঢল ও হালদা নদীর জোয়ারের পানির কারণে মেখল ইউনিয়নের সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে জানিয়ে স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার থেকেই রাস্তাঘাট ডুবে আমাদের বাড়িঘরে দুই তিন ফুট করে পানি উঠে গেছে।

জানা যায়, অনবরত বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি ঢল আর চারদিক থেকে নেমে আসা হালদার পানি ফেঁপে উঠায় বন্যা মারাত্মক ধারন করতে পারে। বিভিন্ন ইউনিয়নের সাথে বিচ্ছিন্ন হতে পারে সদরের যোগাযোগ।ইতিমধ্যে প্লাবিত অঞ্চলের রাস্তাঘাট খানাখন্দে ভরে গেছে। অনেক সড়কে গাড়ি চলছে হেলেদুলে। বন্যার কারণে অনেক গ্রাম অন্ধকারে নিমজ্জিত। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছে উপজেলাবাসী।

 

এদিকে বন্যা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া ও দুর্গতদের সহায়তার আশ্বাস জানিয়ে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিদুল আলম বলেন, ‘পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন এবং পৌর এলাকার কিছু ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে প্রস্তুত।