২০০৭ সালে কাজের জন্য সৌদি আরবে পাড়ি জমান নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার মালিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হারুনুর রশীদ।
হারুন রশিদ ১৫ বছর ধরে সৌদি আরবের দাম্মাম প্রদেশের আভকিক শহরে ‘সাদ আলি আল এশা’ নামে একটি কোম্পানিতে কনস্ট্রাকশনের কাজে ড্রাইবার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ২৫ আগস্ট থেকে তার কোনো সন্ধান মিলছে না। এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আছেন তার দুই ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীসহ স্বজনরা।
আভকিক প্রবাসী নিখোঁজ হারুন রশিদ নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভা ৯ নং ওয়ার্ডের মালিপাড়া গ্রামের মৃত ইউছুফ আলী ব্যাপারীর ছেলে।
এ ব্যাপারে বনপাড়া পৌরসভার মেয়র জাকির হোসেন জানান, ‘২৫ আগস্ট সৌদি আরব থেকে একজন ফোনে জানান, হারুনুর রশীদ কাজের সময় গ্যাস বিস্ফোরণে মারা গেছেন। এ সময় হারুনের ফোন বন্ধ পেয়ে পরিবারের লোকজন তার অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের কেউ কেউ বলছেন হারুন মারা গেছেন; আবার কেউ বলছেন তিনি কোম্পানি থেকে পালিয়ে গেছেন। এ নিয়ে দেশে থাকা হারুনের স্বজনদের মাঝে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
গত ২৭ দিনেও হারুন বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন তার সঠিক তথ্য মেলেনি। যদি বেঁচে থাকেন তাহলে তার সন্ধান আর যদি মারাও যান তবে তার মরদেহটি ফেরত চান পরিবারের সদস্যরা।’
হারুনের স্ত্রী গৃহিণী পারভিন বেগম জানান, ‘আমি আমার স্বামীর কোনো খোঁজই পাচ্ছি না। তাই খুবই চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। আমার স্বামী মারা গেছেন নাকি বেঁচে আছেন তারও কোনো সঠিক তথ্য পাচ্ছি না। আগুনে পুড়ে যদি মারাও যান তাও তার একটা হাড্ডি হলেও চাই। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি।’
হারুনের ছেলে চলিত এসএসসি পরীক্ষার্থী পারভেজ হোসেন জানায়, ‘আব্বুর সঙ্গে আমার সর্বশেষ কথা হয় ২৫ আগস্ট সকাল ৬টার দিকে। আব্বু আমাকে ফোন দিয়ে লেখাপাড়ার খবর জানতে চেয়েছিলেন। এটিই ছিল আব্বুর সঙ্গে শেষ কথা। পরবর্তী সময়ে আর ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি।’
অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া হারুনের মেয়ে ইয়ানুর খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায়, ‘বাবার সঠিক তথ্যটা জানতে চাই। তিনি মারা গেছেন নাকি বেঁচে আছেন, তা জানতে চাই। আমরা খুবই অসহায় অবস্থার মধ্যে আছি।’
সৌদিতে নিখোঁজ হারুন রশিদের পুত্র চলতি এসএসসি পরীক্ষার্থী পারভেজ হোসেন এ প্রতিবেদককে টেলিফোনে জানান, আমরা ইতোমধ্যে বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নাটোর জেলা প্রশাসক মহোদয় মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসীকল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বরাবর আবেন করছি, অন্তত আমার বাবার জীবিত না হলেও মৃত্যু লাশটা যেন ফেরতা পাই। দেশ থেকে আমি আকুল আবেদন জানাচ্ছি আমার বাবা জীবিত নাকি মৃত সঠিক তদন্তের জন্য সৌদি আরবে রিয়াদ-বাংলাদেশ দূতাবাস ও জেদ্দা কনসুলেট সংশ্লিষ্টদের প্রতি।