জীবনযাত্রার বদলের সঙ্গে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছেন মানুষ। কিছু খাবারে পিউরিন বেশি থাকে। এগুলোর মাধ্যমে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড কিডনি পরিশোধন করতে পারে না। তা স্ফটিক আকারে জমা হয় গাঁটে গাঁটে। শুরু হয় ব্যথা। এছাড়াও বিবিধ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ঝুঁকি দেখা দেয়। দুই ধরনের পিউরিন রয়েছে, অভ্যন্তরীণ ও বহির্মুখী। এক্সোজেনাস পিউরিন খাবারের মাধ্যমে শরীরে তৈরি হয়। আর অভ্যন্তরীণ পিউরিন তৈরি করে শরীর।
খাবারে উপস্থিত প্রোটিন পিউরিনে ভেঙে গেলে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। যখন ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে বের হতে পারে না, তখন এটি স্ফটিক আকারে গাঁটে গাঁটে জমাট বাঁধতে শুরু করে। তাই খাবারে নিয়ন্ত্রণ এনে পিউরিন কমানো জরুরি। শরীর হজমে সক্ষম হলে পিউরিন বাইরে নির্গত হয়। যদি পাচনতন্ত্র সম্পূর্ণরূপে পিউরিন প্রক্রিয়া করতে সক্ষম না হলে তৈরি হয় ইউরিক অ্যাসিড। তা বিবিধ সমস্যা তৈরি করে। যেমন-
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি- অত্যাধিক পিউরিন গ্রহণের ফলে হাইপারুরিসেমিয়া হতে পারে। এটি এমন একটি অবস্থা যখন রক্তের প্রবাহে খুব বেশি ইউরিক অ্যাসিড থাকে। শরীরে উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
কিডনিতে সমস্যা- শরীরে অত্যাধিক পিউরিন ইউরিক অ্যাসিডকে স্ফটিক ও শক্ত করে তোলে। কিডনিতে পাথর জমে। কিডনিতে পাথরের বেদনাদায়ক হতে পারে। অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
বাত ও গাঁটে ব্যথা- গেঁটেবাত হলো একটি নির্দিষ্ট ধরনের বাত যা ইউরিক অ্যাসিড স্ফটিক আকারে জমা হওয়ার কারণে ঘটে। প্রায়শই শরীরের গাঁটের চারপাশে যেমন কনুই, হাঁটু বা হাতের গাঁচগুলোতে জমা হতে থাকে ইউরিক অ্যাসিড। গাঁট ফুলে যায়। এমনকি হাড় বেঁকে যেতেও পারে।
পিউরিন যুক্ত খাবার বন্ধ করতে হবে
১। রেড মিট- মাংস কম খাওয়া দরকার। বিশেষ করে রেড মিট এড়িয়ে চলুন। মুরগির লিভার পুষ্টির একটি ভালো উৎস। কিন্তু এটি একটি উচ্চ পিউরিনযুক্ত। তাই উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাংস এড়ান।
২। অ্যালকোহল- বিভিন্ন ধরনের অ্যালকোহলে পিউরিনের মাত্রা পরিবর্তিত হয়। বিয়ারে বিশেষ করে পিউরিন বেশি থাকে। নিয়মিত খাওয়া হলে তা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়।
৩। সামুদ্রিক খাবার- সামুদ্রিক খাবার ও কিছু মাছে সর্বোচ্চ মাত্রায় পিউরিন থাকে। তাই এগুলো খাওয়া বন্ধ করুন।
৪। মিষ্টি- অতিরিক্ত চিনি বাড়ায় ইউরিক অ্যাসিড। স্ফটিক বৃদ্ধির কারণ। তা ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখলে মিষ্টি এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী খাবেন-
আপনি যদি গাউট বা অন্যান্য পিউরিন-সম্পর্কিত স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন, তাহলে আপনার ডাক্তার কম পিউরিন ডায়েটের পরামর্শ দিতে পারেন। নিম্নলিখিত খাবারে পিউরিনের পরিমাণ কম:
লেবু, কমলা, ডালিম, আপেল ও চেরি ইত্যাদি খেলে ইউরিক অ্যাসিড কমে। সবুজ শাকসবজি (ফুলকপি, পালং শাক, মাশরুম এবং সবুজ মটর ছাড়া) কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার খান। এছাড়া পানি পান বাড়ান। মেথি খান। এছাড়া
তিসির বীজ খেতে পারেন।