আজ রবিবার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ই পৌষ ১৪৩১

মানে মানে বিদায় হন, শেখ হাসিনাকে মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : বুধবার ১২ অক্টোবর ২০২২ ০৭:০৫:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন ‘আমরা আন্দোলন শুরু করেছি, আন্দোলনের মূল লক্ষ্য এই সরকার; হাসিনাকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে।’

 

তিনি বলেন, ‘যারা আন্দোলনে অংশ নেবে তাদেরকে নিয়ে সরকার গঠন করা হবে। শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নাই। এখন শেখ হাসিনা বলছেন, দুর্ভিক্ষ আসতে পারে; কম খান, বাতি কম জ্বালান। প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে আছেন কেন? মানে মানে বিদায় হন। নিরাপদে চলে যান। তা না হলে পালানোর পথটাও খুঁজে পাবেন না।’

 

 

বুধবার (১২ অক্টোবর) চট্টগ্রামে বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

 

বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে পরাজিত করা হবে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার অনির্বাচিত সরকার; তাদের কোনো ম্যান্ডেট নাই। ২০১৪ সালে বিনাভোটে এবং ২০১৮ সালে ভয় পেয়ে আগের রাতে ভোট নিয়ে নিজেদের ক্ষমতায় থাকার ঘোষণা করেছে। আমি শেখ মুজিবের ভাষায় বলতে চাই; গত ১৪/১৫ বছরে এই বাংলাদেশকে শ্মশান করে দিয়েছে। ভয়াবহ এই দানবীয় সরকার সবকিছু লুট করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে বলেই বাংলাদেশ আজ শ্মাশানে পরিণত। সারা বাংলাদেশের মানুষ আজকে জেগে উঠেছে। এবং অচিরেই বাংলাদেশের মানুষ এই দানবীয় স্বৈরাচারী সরকার শেখ হাসিনাকে গদি থেকে নামিয়ে আনবে।’

 

 

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকেই আন্দোলন শুরু করেছি। আমরা গণতন্ত্র ফিরে চাই, অধিকারগুলো ফিরে চাই। স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হচ্ছে। ৫০ বছর আগে এই গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ হয়েছে। আজকে আবার সেই গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করতে হচ্ছে। এই লড়াই খুব বড় লড়াই। এই লড়াই শক্ত লড়াই। এই লড়াইয়ে আমাদেরকে জিততেই হবে। আমাদের কোনো বিকল্প নাই। আজকে যদি আমরা জয়লাভ করতে না পারি তাহলে এই দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র থাকবে না। তখন আমাদেরকে উপনিবেশের মতো বসবাস করতে হবে। আমরা মাথা উচু করে বাঁচতে চাই। তাই আজকে এই সমস্যা বিএনপি আওয়ামী লীগ কিংবা জাতীয় পার্টির সমস্যা নয়; গোটা জাতির সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

 

 

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা আবার নির্বাচন করতে চায়; একটা নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। এটা সেই নির্বাচন কমিশন যাকে ডিসি-এসপিরাই মানে না। ডিসি এসপিরা বলেছেন, আমরা এত কিছু মানি না আমরা শেখ হাসিনাকেই মানি। তাদেরকে নিয়ে নির্বাচন করবেন? দেশের মানুষ নির্বাচন হতে দেবে না; অসম্ভব। নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।’

 

কোনো স্বৈরাচারী সরকার আপোসে যায় নাই তাই এই সরকারকে সরাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দাকার মোশাররফ হোসেন।

 

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে উদ্দেশে করে তিনি বলেন, ‘আজকে প্রথম সতর্ক করে দিতে চাই; শত চেষ্টা করেও যখন বিএনপিকে দুর্বল করতে পারেননি। তাই শেষ সময়ে আর চেষ্টা করবেন না। শেখ হাসিনা হয়তো তার কিছু আত্মীয় স্বজন নিয়ে দেশ থেকে পালাবে। কিন্তু আপনারা কেউ পালাতে পারবেন না।’

 

দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে করে বর্ষীয়াণ এই নেতা বলেন, ‘এই সরকারের পতন ঘটাতে প্রস্তুতি নিন। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যারা আজকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাঁধা দিচ্ছে সেই সকল আওয়ামী লীগ নেতাদের লিস্ট তৈরি করুন। জনগণ তাদের বিচার করবে।’

 

প্রশাসনকে উদ্দেশে করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘এখনো যারা অতি উৎসাহী কর্মকর্তা রয়েছেন যারা আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাঁধা দেন; আর এই অবৈধ ভোটচোর স্বৈরাচার এবং যারা আন্তর্জাতিকভাবে হাইব্রিড সরকার নামে পরিচিত তাদের পক্ষে অন্যায় কাজ করবেন না।’

 

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘ওষুধ একটাই এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে জনগণের ভোট জনগণ দিতে পারবে না। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। জনগণের দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আমাদের স্লোগানও একটাই সেটি হচ্ছে ‘হঠাও মাফিয়া বাঁচাও দেশ; জনগণের বাংলাদেশ।’

 

সভা সমাবেশ করা যাবে না সংবিধানের কোথায় লেখা আছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নির্বাসিত; গণতন্ত্র বলতে শব্দ নাই। আছে শুধু শেখ হাসিনার ইচ্ছাতন্ত্র।এই ইচ্ছাতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদের কে আরেকটা যুদ্ধ করতে হবে, সেই যুদ্ধ আমরা উর্ত্তীণ হয়েছি।’