কক্সবাজারের চকরিয়া চোরাই মাছসহ চোর সিন্ডিকেটের তিন সদস্যকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) ভোরে উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের একতা বাজার (গরু বাজার) এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। পরে চোরাইকৃত মাছসহ তাদের হারবাং পুলিশ ফাড়িতে দেয়া হয়।
আটকৃতরা হলেন, উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মহাজের পাড়া এলাকার নাজিম উদ্দিনের ছেলে আবুল কালাম (২৮), একই এলাকার নুরুল কবিরের ছেলে মো. আরমান (২২) ও হারবাং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব নোনাছড়ি এলাকার আকতার হোসেনের ছেলে মো. মিজান (৩০)।
স্থানীয় মৎস্য চাষীরা জানায়, বরইতলী ইউনিয়নের বড়ঘোনা, রামছড়ি, রাজাইল্যাবিল, বাইঘ্যাঘোনা, ভিলিজার পাড়া, মৌলভী পাড়া, হিমছড়ি, দরগাপাড়া, আলমনগর, বুড়ির দোকান ও বরইতলী রাস্তার মাথা এলাকায় অন্তত অর্ধশতাধিক পুকুরে মিঠা পানির মৎস্য চাষ করে আসছে এলাকার লোকজন। ওইসব এলাকার পুকুরে উৎপাদিত মাছ এলাকার চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বিগত ১৫ বছর ধরে মাছ চোর সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে এসব মাছ চাষীদের এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
মৎস্য চাষীরা জানায়, বরইতলী ইউনিয়নের পূর্ব খয়রাতিপাড়া এলাকার কামাল উদ্দিনের ছেলে এহেসানের নেতৃত্বে আরমান, কালাম, জিশু, ফোরকান, তৈয়ব, তারেক ও আরিফ গংদের নিয়ে একটি শক্তিশালি মাছ চোর সিন্ডিকেট গড়ে উঠে। স্থানীয় এসব মাছ চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রতিরাতেই মৎস্য প্রকল্পের পাহারাদারদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পুকুর থেকে মাছ লুট করে নিয়ে যায়। মাছ লুট করার সময় পাহারাদারদের প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দিতো চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা। ফলে চোর চক্রের প্রাণের ভয়ে মুখ খুলতেও সাহস পেতো না মৎস্য প্রকল্পের পাহারাদারা।
মৎস্য ঘেরের মালিক রামিম হাসান মানিক বলেন, বিগত ১৫ বছরে আমাদের পুকুর থেকে অন্তত ২০লাখ টাকার মাছ লুট করেছে চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা। ফলে মাছের খাদ্যের লাখ লাখ টাকা বকেয়া দেনা পড়ে আছে। এমতাবস্তায় মৎস্য চাষ এখন বন্ধের উপক্রম হয়েছে।
মৎস্য প্রকল্পের মালিকরা জানায়, এহেসানের নেতৃত্বে গড়ে উঠা চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা দিনের বেলায় রামছড়ি হরিণ কোয়া নামক স্থানে তাদের আস্তানায় অবস্থান নেয়। রাতের আধাঁরে তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে মৎস্য চাষীদের পুকুর থেকে মাছ লুট করে নিয়ে। দ্রুত তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনজুর কাদের ভূঁইয়া চোরাই মাছসহ চোর চক্রের তিন সদস্যকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য চাষীদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।