মহেশখালী পাহাড়ে বিচরণ করা হনুমান ধরে খাঁচায় বন্দি করে পাচারের উদ্দেশ্যে রাখা পাহাড়ের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে ১২টি বিলুপ্ত প্রায় বন্যপ্রাণী হনুমান উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
৭ই নভেম্বর বিকাল ৩টায় উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের বারিয়ারছড়ি পাহাড়ি এলাকার একটি বাড়ি থেকে এসব হনুমান উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাপলাপুর বিট কর্মকর্তা নুরে আলম মিয়া নাহিদ।
বনবিভাগ সূত্রে জানাযায়, উপজেলার শাপলাপুরের বারিয়ারছড়ি এলাকার পাহাড়ের ভেতরে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে বিলুপ্ত প্রায় ১২টি বন্যপ্রাণী হনুমান পাচারের উদ্দেশ্যে খাঁচায় আটকে রাখা হয়েছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বাচ্চাসহ ১২টি হনুমান উদ্ধার করা হয়।
শাপলাপুর বিট কর্মকর্তা নুরে আলম মিয়া নাহিদ বলেন, মহেশখালীর পাহাড় থেকে বিপুল বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী পাচার করার খবরে বন বিভাগ অভিযান চালিয় ১২টি হনুমান উদ্ধার করা হয়েছে। এসব পাচার চক্রে কারা জড়িত তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বনবিভাগের এই কর্মকর্তা বাংলাদেশ বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা ও বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলানের তথ্যমতে, দেশের তিন প্রজাতির হনুমানের দেখা মেলে যার মধ্যে একটি হল কালোমুখ হনুমানের (Hanuman Langur)। বুনো পরিবেশে এদের গড় আয়ু ১৮-৩০ বছর। সাধারণত জুলাই- অক্টোবর বা কোনো-কোনো ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল এদের প্রজননকাল। স্ত্রী হনুমান ২০০ থেকে ২১২ দিন গর্ভধারণের পর সাধারণত ১/২টি বাচ্চা প্রসব করে। হনুমানের এই প্রজাতিটি গাছের কঁচিপাতা, শাকসবজি ও ফলমূল, ফুল খায়। তবে বসতবাড়ির কাছাকাছি বসবাস করায় মানুষের খাবারেও এরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে।
বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তার তথ্যমতে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন)-২০১২ অনুযায়ী হনুমানের এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত। তাই এটি হত্যা বা এর কোনো ক্ষতি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
মহেশখালী উপজেলার সবচেয়ে বেশি পাহাড়ি অঞ্চল শাপলাপুর ও ছোট মহেশখালী। এসব পাহাড়ি এলাকায় এখনো বন্যপ্রাণীর বিচরণ হয়েছে। পাহাড় কাটা এবং বন্যপ্রাণী নিধনের কারণে পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য এখন প্রায় বিলুপ্ত।