কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদী থেকে উদ্ধার শিশু হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসা ছোট বোন অনৈতিক তাবিজ-কবচ, ঝাঁড়-পোড়সহ বৈদ্যালি করতে বারণ করে বড় বোন। এতে ক্ষুব্দ হয়ে আপন ভাগিনা সাত মাস বয়সী মোহাম্মদ আনাছকে নদীতে ফেলে হত্যা করে খালা। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য নিজেই স্বীকার করেছে শিশুর খালা আঁখি রহমান (১৯)।
নিহত শিশু আনাছের বাবা হোসাইন আলী ও তার মা সাকিলা বেগম বলেন, বিএমচর ইউনিয়নের ছৈনারমার ঘোনার ছৈয়দ আকবরের মেয়ে সাকিলার ছোট বোন আঁখি রহমান বেড়াতে আসে ৫ নভেম্বর। সুরাজপুরে বেড়াতে আসার পর থেকে বড় বোনের শ্বশুর বাড়ির একটি রুমে জ্বীনের অজুহাতে ঝাড়-পোড় শুরু করে। অল্প বয়সে এমন অনৈতিক কাজ করতে বারণ করে বড় বোন সাকিলা ও দুলাভাই হোসাইন আলী। এতে রাগ ও ক্ষুব্দ হয়ে উঠে আঁখি। সেই রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় বুধবার (৯ নভেম্বর) ভোরে ভাগিনা শিশু আনাছকে মুখে কাপড় চাপা দিয়ে মাতামুহুরী নদীতে ফেলে হত্যা করে।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে কান্নারত সাত মাস বয়সী সন্তানকে দুধ খাইয়ে ঘুম পাড়ায় মা সাকিলা। এরপর দুই রুমের ঘরের এক রুমে হোসাইন আলী ও আরেক রুমে সাত মাসের সন্তান আনাছ, শিশু মেয়ে মরিয়ম জন্নাত (৪), বেড়াতে আসা ছোট বোন আঁখি ও ননদ খতিজা বেগমকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সাকিলা। বুধবার ভোর ৫ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে শিশু সন্তানকে পাশে না দেখে সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে দেয় সাকিলা। সবাই খোঁজাখুঁজি করেও পায়নি। তাদের কান্না-কাটি ও হৈ-হুল্লোড়ে প্রতিবেশিরাও কি হয়েছে দেখতে আসে। ওইসময় আঁখির পরনের থ্রি-পিসে কাঁদা দেখে সন্দেহ হলে তাকে সবাই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এক পর্যায়ে সে আনাছকে মাতামুহুরী নদীতে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দেয় বলে খালা আঁখি রহমান। এছাড়াও বৃহস্পতিবার চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শিশু আনাছকে মাতামুহুরী নদীতে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করেন।
তিনি আরও বলেন, নিহত শিশু আনাছের বাবা হোসাইন আলী বাদী হয়ে থানায় দায়ের করা এজাহারটি মামলা হিসেবে এন্ট্রি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে একমাত্র আসামী আঁখি রহমানকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।##