দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা স্থানীয় পর্যায়ে প্রকাশ হচ্ছে। বুধবার (১৬ আগস্ট) উপজেলা নির্বাচন অফিস, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এ লক্ষ্যে ইসির ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সব নির্বাচনি এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন করে ভোটকেন্দ্রের সম্ভাব্য তালিকা প্রস্তুত করেছে।
ঘোষিত সময়সূচি হচ্ছে— খসড়া কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ বুধবার (১৬ অগাস্ট), তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি নেওয়ার শেষ তারিখ ৩১ অগাস্ট। এসব দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তির শেষ তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর এবং খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করতে হবে ১৭ সেপ্টেম্বর।
তালিকা চূড়ান্ত করে মাঠ পর্যায় থেকে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে ২৪ সেপ্টেম্বর ইসি সচিবালয়ে পাঠাতে হবে।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকার সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মো. মুনীর হোসাইন খান বলেন, ‘নির্ধারিত কমিটির মাধ্যমে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করে খসড়া প্রকাশের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। বুধবার (১৬ আগস্ট) সারা দেশের মতো ঢাকা জেলার স্থানীয় পর্যায়ের অফিসগুলোতে সবার জন্যে তা উন্মুক্ত থাকবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কারও কোনও দাবি বা আপত্তি থাকলে এ নিয়ে আবেদন জমা দিতে পারবেন।’
তিনি জানান, একাদশ সংসদ নির্বাচনের তুলনায় ভোটার বাড়ায় এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রও বাড়বে। ভোটকেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে আগের সিংহভাগ কেন্দ্রকেই বহাল রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়া নতুন কিছু কেন্দ্রও প্রস্তাব করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী জানান, বুধবার জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সবার সুবিধার্থে খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা জেলা নির্বাচন অফিস, উপজেলা নির্বাচন অফিস, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে প্রকাশ করা হবে।
কোনও ভোটকেন্দ্র নিয়ে আপত্তি থাকলে বা কোনও কেন্দ্র স্থাপনের দাবি থাকলে এ সংক্রান্ত লিখিত আবেদনও করার বিধান রয়েছে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে আহ্বায়ক কমিটি এসব আবেদন যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, সেপ্টেম্বরের মধ্যে খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর আইন-বিধি অনুযায়ী, ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে গেজেট প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। গেজেট প্রকাশের পরও সংসদ নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর কোনও ভোটকেন্দ্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অধীনে বা নিয়ন্ত্রণে থাকলে, তা সরেজমিন যাচাই করে রিটার্নিং অফিসার জরুরি ভিত্তিতে কমিশনকে জানাবেন। তখন বিষয়টি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এবার ১১ কোটি ৯২ লাখের মতো ভোটারের বিপরীতে ৪২ হাজারের মতো ভোটকেন্দ্র হতে পারে। অবশ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরামর্শ রয়েছে— যতদূর সম্ভব কেন্দ্র কমানোর।
সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনে ১০ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি ভোটারের জন্য ৪০ হাজার ৫১টি ভোটকেন্দ্র এবং তাতে দুই লক্ষাধিক ভোট কক্ষ ছিল। দশম সংসদ নির্বাচনে ৯ কোটি ১৯ লাখ ভোটারের জন্য কেন্দ্র ছিল ৩৭ হাজার ৭০৭টি। তখন ভোটকক্ষ ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ০৭৮টি। নবম সংসদ নির্বাচনে ৮ কোটি ১০ লাখ ভোটারের জন্য কেন্দ্র ছিল ৩৫ হাজার ২৬৩টি। ভোটকক্ষ ছিল এক লাখ ৭৭ হাজারর ২৭৭টি।