বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ৩২ জেলে ভারতীয় কোস্ট গার্ডের হাতে আটক হয়েছেন বলে দাবি করেছেন এফভি সোনার মদিনা ট্রলারের মালিক। গত ৮ ফেব্রুয়ারী বাঁশখালীর শীলকূপ ঘাট থেকে মাছ ধরতে বের হলে ১৩ ফেব্রুয়ারী সাগরে ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে পথ হারিয়ে ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়লে বাঁশখালীর এফভি সোনার মদিনা ট্রলারকে আটক করে ভারতীয় কোস্ট গার্ড। এসময় অবৈধভাবে প্রবেশের দায়ে ট্রলারে থাকা বাঁশখালীর ৩২ জেলেকেও আটক করে ভারতীয় কোস্ট গার্ড।
ভারতে আটককৃত বাঁশখালীর জেলেরা হলেন, শীলকূপ ইউনিয়নের মনকিচর এলাকার ওমর মিয়ার পুত্র শাহ আলম, ওমর কাজীর পুত্র মোঃ ছাবের, আলী আকবরের পুত্র ছৈয়দুল আলম, ওমর কাজীর পুত্র হাবিবুর রহমান, মোস্তফা আলীর পুত্র কামাল হোসেন, হাবিব উল্লাহর পুত্র জিয়াউর রহমান, কামাল উদ্দীনের পুত্র দিদারুল আলম ও জয়নাল আবেদিন, মুহাম্মদ আলীর পুত্র নুর হোসেন, মুহাম্মদ আলীর পুত্র আজগর হোসেন, সিকান্দার আলীর পুত্র আলী আহমদ, মোস্তফা আলীর পুত্র জাফর আহমদ, মোঃ ইউসুফের পুত্র আকতার হোসেন, মুহাম্মদ হানিফের পুত্র কবির হোসেন, হাসান আলীর পুত্র আবুল হোসেন, আহছান আলীর পুত্র নুরুল ইসলাম, ওমর কাজীর পুত্র জয়নাল উদ্দীন, আবুল কাশেমের পুত্র মাহমুদুল ইসলাম, আবুল কাশেমের পুত্র ওবাইদুল হক, আলী আহমদের পুত্র মোঃ আবদুল্লাহ, হারুনুর রশিদের পুত্র শামসুল আলম, নবী হোসেনের পুত্র সাদ্দাম হোসেন, শাহ আলমের পুত্র মোঃ ফারুক, আবদুল আজিজের পুত্র মোঃ জোনাইদ, লাল মিয়ার পুত্র আবদুল আজিজ, নুরুচ্ছফার পুত্র আহমদ নুর, ছৈয়দ নুরের পুত্র আরিফ উল্লাহ, আবদুস সালামের পুত্র হোসেন আহমদ, মোস্তফা আলীর পুত্র নুরুল আলম, নজির আহমদের পুত্র জসীম উদ্দীন, আমির আমজার পুত্র মোঃ ইয়াছিন।
বাঁশখালী উপজেলার শীলকূপ ইউনিয়নের মনকিচর এলাকার নুরুল আবছারের মালিকানাধীন ৩২ জেলেসহ এফভি সোনার মদিনা নামের ফিশিং ট্রলারটি আটক করা হয়। আটককৃতরা বর্তমানে ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানা ও নামখানা জেলহাজতে বন্দি আছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সোনার মদিনা ফিশিং ট্রলারের মালিক নুরুল আবছার জানান, আমি গত ১৩ ফেব্রুয়ারী একটি ফোনকলের মাধ্যমে জানতে পারি আমার ট্রলারটি ৩২ জেলেসহ ভারতে আটক করা হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে আমি বাঁশখালী থানায় ১৬ ফেব্রুয়ারী একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। আমি আমার জেলেসহ ট্রলার ফেরত পেতে সরকারের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।
রাশেদা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলে ভুলে ভারতের জলসীমায় ঢুকে গেছে। আমার বুকের ধনকে আমি ফিরে পেতে চাই। আমি প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
আটক নুরুল ইসলামের পিতা আহছান আলী বলেন, আমার মৎস্যজীবি ছেলেসহ ৩২ জেলে ভুলবশত ভারতের জলসীমায় ঢুকে গেছে। আমরা দিনে এনে দিনে খাই। এই ছেলে ছাড়া আমরা অসহায়। আমরা আমাদের ছেলেদের ফেরত পেতে সরকারের সহযোগিতা চাই।
বাঁশখালী থানার ওসি মোঃ কামাল উদ্দীন জানান, এব্যাপারে বাঁশখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। বিস্তারিত খোঁজ নেয়া হচ্ছে।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী জানান, ভারতে আটক জেলেদের তালিকা সংগ্রহ করতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তালিকাটি হাতে পেলে জেলেদের ফিরিয়ে আনতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।