বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের জোট ছেড়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ইবরাহিমকে তার নির্বাচনী এলাকা হাটহাজারীতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার (২২ নভেম্বর) হাটহাজারী উপজেলা এবং পৌরসভা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ ঘোষণা দেন।
এক বিবৃতিতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নূর মোহাম্মদ ও সদস্য সচিব গিয়াসউদ্দিন বলেন, বর্তমান সরকার অবৈধ এবং আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের অধীনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি যুক্তফ্রন্ট গঠন করে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। এতে হাটহাজারীর সাধারণ জনগণের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর হাটহাজারী উপজেলা বিএনপির জনমনে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। মেজর জেনারেল (অব.) ইবরাহিম শেষ বয়সে এসে স্বেচ্ছাচারিতা, লোভ-লালসায় লালায়িত হয়ে অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে এই ঘৃণিত কাজ করেন।
বেইমানি করা মেজর জেনারেল (অব.) ইবরাহিমের মজ্জাগত ও স্বভাবসিদ্ধ ব্যাপার। তিনি ১৯৯৬ সালে জেনারেল নাসিমের অভ্যুত্থানের পক্ষে ছিলেন এবং তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস কর্তৃক মেজর জেনারেল হেলাল মোর্শেদ খানের সঙ্গে বরখাস্ত হন।
সেই জেনারেল হেলাল মোর্শেদ খান এখন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। ২০১৮ সালে বিএনপি নিজ দলের শতভাগ যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন না দিয়ে মেজর জেনারেল (অব.) ইব্রাহিমের মতো একজন সিঙ্গেল ম্যানের জোটকে সম্মান দেখিয়ে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়। তার পক্ষে বিএনপির সব ইউনিট কাজ করে। কিন্তু তখনো তিনি সে সময়ের মহাজোট প্রার্থীর কাছে আর্থিক সুবিধা নিয়ে নিজেকে আত্মসমর্পণ করেন।
ইব্রাহিমের নির্বাচনে কাজ করতে গিয়ে হাটহাজারী বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের বহু নেতাকর্মী হামলা মামলা এবং নির্যাতনের শিকার হলেও তিনি কারো খোঁজ-খবর নেননি। তাই, দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায়, মোনাফেকী এবং বেইমানি তার মজ্জাগত।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা হাটহাজারী উপজেলা, পৌরসভা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মেজর জেনারেল (অব.) ইব্রাহিমকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করলাম। পাশাপাশি তাকে আমরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম। আর যদি হাটহাজারী উপজেলা উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি পরিবারের কেউ ইব্রাহিমকে কোনোভাবে সহযোগিতা করেন বা যোগাযোগ রাখেন, তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
জানা গেছে, বুধবার (২২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে যুক্তফ্রন্ট নামে একটি জোট গঠন করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন সৈয়দ ইবরাহিম। তিনি নতুন ওই জোটের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ ইবরাহিম বলেন, এই মুহূর্তে আমার রাজনৈতিক অক্ষমতা এই যে, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে পেরে উঠছি না। ২৮ অক্টোবরের পর সুনির্দিষ্ট একটা অবস্থা এসে দাঁড়িয়েছে যেখানে পরিস্থিতি পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন যে, চুপ থাকব না কি বিকল্প ব্যবস্থা নেব। আমি বিকল্প অবস্থান নিয়েছি, নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।