আজ রবিবার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ই পৌষ ১৪৩১

দেশে আ.লীগের নেতৃত্বে আর কোনো নির্বাচন হবে না: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : শনিবার ২৮ মে ২০২২ ০৫:৩২:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

এই দেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আর কোনো জাতীয় নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এরপর সেই সরকার যে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে তাদের অধীনে সবদলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার (২৮ মে) দুপুরে ঝিনাইদহে জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জেলা সদর উপজেলার ডাকবাংলো আব্দুর রউফ ডিগ্রি কলেজে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বলে এখন আর কিছুই নেই। প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে, ছাত্রদের ধ্বংস করছে। এসব কারণে আওয়ামী লীগ সরকারকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হবে না।

‘অতীতে যেভাবে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারকে পতন করা হয়েছিল, আগামীতেও ঠিক তাই করা হবে। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। সত্যিকার অর্থে দেশকে জনগণের রাষ্ট্রে পরিণত করবো। যোগ করেন ফখরুল।’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা একটা মাফিয়ার দেশে পরিণত হয়েছে। জনগণের ভোটে নির্বাচত নয় এই সরকার আজকে জোর করে ক্ষমতা দখল করে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা যখন চুরি-চামারির কথা বলি, গায়ে লাগে তাদের। গায়ে লাগার কিছু নাই, চুরি করলে মাথা নিচু করে থাকতে হবে। সময় আসছে, যখন তাদের মাথা নিচু করে এ দেশ থেকে চলে যেতে হবে।

ফখরুল বলেন, প্রত্যেকটি চোরের-ডাকাতের বিচার হবে এ দেশে। তারা বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। তাই আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, এরা কোনো নির্বাচিত সরকার নয়। এরা কোনো নির্বাচনে জয় লাভ করতে পারেনি। শুধুমাত্র রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিভিন্ন আধিপত্যবাদী, পরাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। আমাদের সমস্ত স্বপ্ন, আশা-আকাঙ্ক্ষা আছে তা ধ্বংস করে দিচ্ছে। ৬ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। ৩৫ লাখের বেশি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।

তারা একই কায়দায় এ দেশ শাসন করতে চায়, বিরোধী সব মতকে দমন করতে চায়, গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করতে চায়। আবারও তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্ত ঝরিয়েছে। আমাদের ছাত্রদলের নেতাদের নির্মমভাবে পিটিয়ে-গুলি করে আহত করেছে। খুলনায় গত পরশু তারা মিটিংয়ে আক্রমণ করেছে। বিভিন্ন জায়গায় তারা সন্ত্রাস করে, ভয় দেখিয়ে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আবারও মানুষের অধিকার আদায়ের যে সংগ্রাম তা ধ্বংস করে দিতে চায়। এবার জেগে উঠছে মানুষ। আমাদের নেতা তারেক রহমান যে পতাকা উত্তোলন করেছেন তা এ দেশের মানুষের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পতাকা। যে পতাকা শহীদ জিয়াউর রহমান তুলে ধরেছিলেন, মানুষের সামনে নিয়ে এসেছিলেন; বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা কোথাও চাকরি পাই না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা পাস করে যায় কিন্তু তাদের চাকরি দেওয়া হয় না। অথচ ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে বলেছিল, ঘরে ঘরে চাকরি দেবে; ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে; বিনা পয়সায় সার দেবে। যেখানে যাবে শুধু পয়সা। পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পেতে হলে ২০ লাখ টাকা কমপক্ষে লাগে, তাও পাবেন না যদি আওয়ামী লীগ না হন। এ দেশকে তারা লুটপাটের রাজত্ব বানিয়েছে। 

তারেক রহমানের নেতৃত্বে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে সত্যিকার অর্থে জনগণের রাষ্ট্রে পরিণত করার আহ্বান জানান তিনি।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এস এস মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মসিউর রহমান, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল প্রমুখ।