ট্রেড লাইসেন্স জনিত সমস্যায় পড়েছেন দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাগণ। যে কারণে ব্যাংকের ঋণ নিতে গেলে তারা জটিলতার শিকার হচ্ছে। ফলে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ প্রাপ্তির সুযোগ থেকে উদ্যোক্তাদের অনেকে বঞ্চিত।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) স্থানীয় ব্যাংক কর্মকর্তা এবং ক্ষুদ্র মাঝারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে কভিড-১৯ প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে মতবিনিময় সভায় এসব কথা ওঠে আসে।
সভায় বক্তারা বলেন, মহেশখালীতে বর্তমানে ট্রেড লাইসেন্স পাওয়াটা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। অবস্থার নিরসন হওয়া দরকার।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর যৌথ উদ্যোগে উপজেলা কমপ্লেক্স মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ যাতে সহজে স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পেতে পারেন সে জন্য ব্যাংকারদের আরো আন্তরিক হতে হবে।
স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ট্রেড লাইসেন্স পেতে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন প্রধান অতিথি।
চেম্বারের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিনুয়ারা বেগম, কুতুবজুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ কামাল, মহেশখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল বশর পারভেজ এবং চেম্বার পরিচালক আজমল হুদা।
সভায় উপস্থিত উদ্যোক্তাগণ বলেন, জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের কারণেও অনেকেই ট্রেড লাইসেন্স পাচ্ছে না। প্রণোদনা প্যাকেজ সম্পর্কে জানে না ৯৫ শতাংশ ক্ষুদ্র মাঝারি উদ্যোক্তা।
স্থানীয় নারী উদ্যোক্তা সবিতা দাশ বলেন, আমরা ঘরে বসে শুধু সেলাই কাজ করি। সুযোগ এবং প্রশিক্ষণ পেলে আমরা বাজার চাহিদা অনুযায়ী এর সম্প্রসারণ করতে পারি।
সভায় সোনালী, পূবালী, কৃষি ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
তারা বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজের বরাদ্দ শতভাগ পূরণ করতে তারা সক্ষম হয়েছে। আগামী বছর থেকে ওনারা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে ঋণ বিতরণ শুরু হবে জানান স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক কর্মকর্তা।
ব্যাংক কর্মকর্তাগণ আরো বলেন, একাউন্ট খোলার জন্য ট্রেড লাইসেন্সসহ কিছু মৌলিক কাগজপত্রের প্রয়োজন। উদ্যোক্তাগণ তা পূরণ করতে না পারায় অনেকেই সহজশর্তে স্বল্প সুদে ঋণ নিতে পারছে না।
প্রেসক্লাবের সভাপতি বলেন, মাতারবাড়িকে ঘিরে অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ নানান অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে অনেক প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তাদের জীবন-জীবিকার মাধ্যম লবণের মাঠসহ বসতভিটা হারিয়েছে। তাদের জন্য সরকারি এবং চেম্বারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
মতবিনিময় সভার প্রধান আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, মাতারবাড়ি ঘিরে সরকার যে অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছে হতে গেলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আরোও যুগোপযোগী উপযুক্ত করে তুলতে হবে। অন্যথায় ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক প্রতিযোগবতায় ছিটকে পড়বে। সরকারের উচিত হবে এই মুহূর্তে মেগা প্রকল্পের অঞ্চলের চাহিদা অনুযায়ী মহেশখালীতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা, যাতে সুবিধাবঞ্চিত স্থানীয় জনগণ নিজেদের অর্থনৈতিক মহা কর্মযজ্ঞের অংশীজন হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, ২০৪১ সালে জ্ঞানলব্ধ সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা সময়ের দাবি। বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করবে কক্সবাজার চেম্বার অফ কমার্স।