চট্টগ্রামের চন্দনাইশের সীমান্তবর্তী সাতকানিয়ার খাগরিয়া ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের নুর মোহাম্মদ কর্তৃক গত ১৩ মে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে করা সংবাদ সম্মেলনের তীব্র প্রতিবাদ করে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন একই এলাকার আবুল কালাম, দিল মোহাম্মদ ও তাদের পরিবার।
বুধবার (১৫ মে) সকাল সাড়ে ১১টায় দোহাজারী পৌরসভাস্থ একটি রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে তাদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আবুল কালামের মেয়ে আরিবা সুলতানা তোহা। আবুল কালাম বলেন, "গত সোমবার আমাদের প্রতিপক্ষ নুর মোহাম্মদ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বলেছেন, আমরা নাকি তাদের পৈতৃক ও মৌরশী সম্পত্তি মনির আহমদের কাছ থেকে খাজনায় নিয়ে তথায় ঘর বাড়ি তৈরি করে আর ফেরত দিচ্ছি না। ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
প্রকৃত ঘটনা হলো আমি (আবুল কালাম) সাতকানিয়া উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নে নগেন্দ্র লাল মজুমদারের দুই ছেলে শচীন্দ্র লাল মজুমদার ও হীরেন্দ্র লাল মজুমদারের কাছ থেকে ১৯৮৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর দেড় গন্ডা জমি ক্রয় করি। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একই মালিক থেকে নুর মোহাম্মদের পিতা মনির আহমদ (বর্তমানে মৃত) একই তফসিলে দেড় গন্ডা জমি ক্রয় করে। আমরা উভয় পক্ষ দাতার কাছ থেকে জমি বুঝে নিয়ে স্ব স্ব জমিতে বসত বাড়ি নির্মাণ করে চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে গাছপালা রোপণ করে দীর্ঘ বছর যাবত পরিবার পরিজন নিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করে আসছি।
পরবর্তীতে আমাদের জমির উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে মনির আহমদের। উনি জীবদ্দশায় আমাদের ক্রয়কৃত জমি তার নিকট বিক্রি করার প্রস্তাব দিলে আমরা রাজি না হওয়ায় মনির আহমদ ও তার উত্তরসূরীরা অর্থ ও স্থানীয় প্রভাব বিস্তার করে থানা ও কোর্টে আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছেন। এব্যাপারে খাগরিয়া ইউ.পি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ গত ২০১৪, ১৫ ও ১৯ সালে সরেজমিনে স্ব স্ব জমি কবলা মূলে পরিমাপ করে বুঝিয়ে দিলেও নুর মোহাম্মদ গং তা মেনে নিতে নারাজ।
এছাড়া বিভিন্ন মামলা তাদের পক্ষে না যাওয়ায় কিংবা মামলা হেরে যাওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৮ মে সকালে নুর মোহাম্মদ ও অপরাপর ৪ থেকে ৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি নিয়ে আমার বাড়ির সামনে এসে আমাকে ও আমার পরিবারকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। আমার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস তাদেরকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে তারা আমার বাড়িতে ঢুকে জান্নাতুল ফেরদৌসকে মারধর করে বিভিন্ন যায়গায় জখম করে এক পর্যায়ে আমার বাড়ির আলমারি ভেঙে স্বর্ণালংকার ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
তাৎক্ষণিকভাবে ৯৯৯ এ ফোন দিলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং থানায় এব্যাপারে একটি অভিযোগ করার জন্য বলে যান। আমি ঐদিন উল্লেখিত আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি এবং বর্তমানে অভিযোগটি তদন্তাধীন অবস্থায় আছে। এমতাবস্থায় নুর মোহাম্মদ গং উক্ত মামলা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য গত ১৩ মে দোহাজারীতে একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। আমরা এই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আইনি সহযোগিতা পাওয়া ও জীবনের নিরাপত্তা বিধানের জন্য মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, এমপি মহোদয়, উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়সহ পুলিশ প্রশাসনের সদয় সুদৃষ্টি কামনা করছি।"
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আবুল কালাম, দিল মোহাম্মদ, আবুল হাশেম, মনির আহমদ, মোঃ ইদ্রিস, সাহাব উদ্দীন, লেদু মিয়া, আলী আজগর, মিনহাজ, আলোন্নিসা, পারভীন আক্তার, আরিবা সুলতানা তোহা, নুরু আক্তার বুলু, জান্নাতুল ফেরদৌস, খতিজা বেগম, রেশমী আক্তার, ফারজানা আক্তার নিশু প্রমূখ।