পরীক্ষা না দিয়েও একটি বিষয়ে জিপিএ-৫ পাওয়া বাঁশখালীর চাম্বল উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই দুই শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণে তাদের ফলাফল পরিবর্তন হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ জুন) চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
জানা যায়, মাধ্যমিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে নৈর্ব্যক্তিক ও ব্যবহারিকে ২৫ নম্বর করে মোট ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই বিষয়ের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা ছিল। ৩০ মিনিটের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় কেন্দ্রেই উপস্থিত হননি দুই শিক্ষার্থী। পরীক্ষা ছিল না মনে করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষায় অংশ নেননি এই দুই পরীক্ষার্থী। পরে তারা তাড়াহুড়ো করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছালে দেখতে পান পরীক্ষা শেষ করে পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন। অথচ, গত ১২ মে প্রকাশিত এসএসসির ফলাফলে দেখানো হয়, তারা দুজনই আইসিটি বিষয়ের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। সাদিয়া সোলতানা ও উর্মি আক্তার নামের এই দুজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে কীভাবে পাস করলেন সেটা নিয়ে উপজেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দুজনই তাদের ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্র (বাঁশখালী-১) থেকে নম্বরপত্র পাঠানো হয়। একইভাবে অনুপস্থিত দুই শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র জমা না হওয়া সত্ত্বেও তত্ত্বীয় (নৈর্ব্যক্তিক) পরীক্ষায়ও সর্বোচ্চ নম্বর দিয়ে তাদের জিপিএ-৫ পাইয়ে দেন বোর্ড পরীক্ষকরা।
এ বিষয়ে বাঁশখালী আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের কেন্দ্রসচিব রতন চক্রবর্তী বলেন, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে পরীক্ষার দিন ওই দুই শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। তারা সেদিন কেন্দ্রেও আসেননি। আমরা দুই শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতির তথ্য পরীক্ষার দিনই বোর্ডে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু পরীক্ষায় অংশ না নেওয়া ওই দুই শিক্ষার্থী কীভাবে জিপিএ-৫ পেল তা বুঝতে পারছি না।’
এদিকে মঙ্গলবার (১১ জুন) অনলাইনে দেখা যায়, চাম্বল উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই দুই শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এএমএম মুজিবুর রহমান দৈনিক সাঙ্গু কে বলেন, ‘যারা পরীক্ষার ফলাফল প্রস্তুত করে, তাদের কোনো একটা ভুলের কারণে এটা হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল প্রস্তুত করতে গেলে তো ভুল ত্রুটি থাকে। আমাদের শৃঙ্খলা কমিটিতে বিষয়টি উঠবে।’
এ বিষয়ে গাফিলতির কথা স্বীকার করে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিম বলেন, ‘পুরো বিষয়টিতে যে বা যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দ্য ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন অর্ডিন্যান্স, ১৯৬১ অনুযায়ী বোর্ড নিজে ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে ফৌজদারি ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে।’