কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার ভরামুহুরীস্থ উকিলপাড়া এলাকায় স্টোকে বৃদ্ধা মহিলার স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও একটি চক্র ওই ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিয়ে আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশী নিরীহ লোকজনকে হয়রাণি চেষ্ঠা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১৫ ডিসেম্বর সকাল এগারটার দিকে চকরিয়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের ভরামুহুরীস্থ উকিলপাড়া এলাকার ফজল করিমের স্ত্রী আমিনা খাতুন (৭৫) নিজবাড়িতে স্টোক করেন। তাৎক্ষনিক পরিবার সদস্যরা তাকে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাররীক পরীক্ষা শেষে তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর আবদুচ ছালাম। তিনি বলেন, বৃদ্ধা মহিলা আমিনা খাতুনের মৃত্যুর কথা শুনে আমি তাৎক্ষনিক তাঁর বাড়িতে যাই। ওইসময় চকরিয়া থানার পুলিশের একটি টিমও সেখানে পৌঁছেন। থানার এসআই ফারকসহ পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে পরিবার সদস্য এবং প্রতিবেশি লোকজনের সঙ্গে কথা বলে আমিনা খাতুনের মৃত্যুর বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে হয়েছে বলে জানতে পারি।
তিনি বলেন, পরে শুনেছি, আমিনা খাতুনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁর মৃত্যু নিয়ে পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকলেও একটি চক্র কৌশলে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার চেষ্ঠা করছে। এইধরণের ঘটনা কারো জন্য কাম্য নয়।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, চকরিয়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের ভরামুহুরীস্থ উকিলপাড়া এলাকায় ফজল করিমের পরিবার এবং তাঁর ভাই মৃত ইমাম উদ্দিনের ওয়ারিশ তথা ছেলে-মেয়েরা পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। পৈত্রিক বাড়িভিটা ও জায়গা জমি এখনো বিভাজন হয়নি তাদের মধ্যে। ধারণা করা হচ্ছে, বসতভিটা জমি-জমার বন্টন জেরে স্টোকে মৃত্যুর ঘটনাটি অন্যদিকে প্রভাবিত করার চেষ্ঠা করছেন আমিনা খাতুনের পরিবার।
উকিলপাড়ার বাসিন্দা মৃত ইমাম উদ্দিনের মেয়ে মনোয়ারা বেগম দাবি করেন, আমার বাবা-মা দুইজনই মারা গেছেন অনেক আগে। পরিবারের ৬ বোন ও দুই ভাই থাকলেও আমি মনোয়ারা বেগম, বড়ভাই জাফর আলম ড্রাইভার ও অপর বোন মোস্তাফা বেগম পরিবার নিয়ে বসবাস করছে চাচা ফজল করিমের পাশে পিতার অংশের বাড়িভিটায়।
তিনি বলেন, পৈত্রিক বাড়িভিটা ও জমিজমা নিয়ে চাচা ফজল করিমের পরিবারের সঙ্গে আমাদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে টুকটাক কথা কাটাকাটি হলেও পরে উভয় পরিবার শান্তিপুর্ণ পরিবেশে বসবাস করে আসছি। এরই মধ্যে গত ১৫ ডিসেম্বর সকালে আমার চাচী আমিনা খাতুন (৭৫) নিজবাড়িতে স্টোক করেন। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান। কিন্তু তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে একটি মহল আমাদের কাছ থেকে প্রথমে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। এতে আমরা রাজি হয়নি, কারণ আমার চাচীর মৃত্যু হয়েছে স্বাভাবিকভাবে। পুলিশের কাছে আমিনা খাতুনের পুত্র জয়নাল আবেদিনের স্ত্রী কামরুন নাহার ঝিনু তাঁর শ্বাশুড়ির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে স্বাক্ষ্যও দিয়েছেন।
উল্টো সেই ঘটনাকে পুঁিজ করে কতিপয় চক্রটি এখন আমাকে এবং আমার বিবাহিত মেয়ে সোনিয়া আক্তার, অপর বিবাহিত মেয়ে তানিয়া সুলতানা আছমা, মেয়ের জামাতা নুরুল ইসলাম পারভেজ এবং আমার স্কুলপড়–য়া নাতনীকে আসামি করে থানায় মামলা দিয়ে হয়রাণির চেষ্ঠা করছে। অথচ আমার দুই মেয়ে ও মেয়ের জামাতা এবং নাতনীরা চাচী আমিনা খাতুন মারা যাওয়ার খবর শুনে জানাযা পড়তে বাড়িতে এসেছিলো।
ভুক্তভোগী মনোয়ারা বেগম পুলিশ প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবির পাশাপাশি একটি স্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় অযথা হয়রাণি থেকে তাঁর পরিবারকে রক্ষায় কক্সবাজারের জেলা পুলিশ সুপার, সহকারি পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) ও চকরিয়া থানার ওসিসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।