সারাবছর তেমন কাজ না থাকলেও ঈদুল আজহা এলে কিছুটা ব্যস্ততা বাড়ে কামারদের। নতুন দা-বটি তৈরির সঙ্গে সঙ্গে পুরোনোগুলোতে শান দেওয়ার কাজ আসে তাদের হাতে।
আর কয়দিন পরই কোরবানির ঈদ। তাই সারাদেশের মতো চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বিভিন্ন বাজারের কামারদের ব্যস্ততা বেড়েছে। গত রোববার (২৬ জুন) সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কামারশালাগুলো থেকে টুংটাং শব্দ ভেসে আসছিল। সম্প্রতি লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় দা, বটি, ছুরির দাম আকারভেদে ২০/৫০/১০০ টাকা করে বেড়েছে। এছাড়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে এসব জিনিস সারানোর ব্যয়ও বেড়েছে খানিকটা।
আগের তুলনায় বাজারগুলোতে কমেছে কামারশালার সংখ্যা। প্রতিটি বাজারে এখন ২-৩টির বেশি কামারশালা দেখা যায় না। কিছু দোকানি বলছেন, এখন আগের মতো নতুন লোহার দা-বটি বিক্রি হয় না। দেশে বিভিন্ন ধরনের চায়নিজ এবং বিদেশি ইস্পাতের দা, ছুরি আসায় তাদের বিক্রি কমে গেছে। ফলে দিনদিন কমে যাচ্ছে কামারশালা।
উপজেলার বারইয়ারহাট পৌরসভার একটি কামারশালার মালিক সুমন কর্মকার বলেন, গরু জবাইয়ের বড় একটি ছুরির দাম এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। বড় দা-বটি বিক্রি করি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। মাঝারি সাইজের দা-বটি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। আর মাঝারি ছুরির দাম ২৫০ টাকা, ছোট ছুরি ১২০ টাকা।
তিনি আরও বলেন, মূলত কোরবানির জন্য আমরা অপেক্ষায় থাকি। সারাবছর তেমন বিক্রি হয় না।
উপজেলার জোরারগঞ্জ বাজারের মিলন কর্মকার জাগো নিউজকে বলেন, আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। কোনোরকমে জীবন চলে। কোরবানি আসলেই একটু কাজ হয় আর ভালো কিছু খেতে পারি। সারাবছর তেমন কাজ থাকে না। বসে থাকতে হয়।
তিনি বলেন, দা-বটি শান দিয়ে পাই ৫০ থেকে ৭০ টাকা। বাট লাগালে ১২০ টাকা পাই। এভাবে প্রতিদিন আয় হয় ২০০ টাকার মতো। এই টাকায় সংসার চালানো কষ্টকর।
উপজেলার মিঠাছড়া বাজারে দা-বটি সারাতে আসা মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও দা-বটি শান দেওয়ার জন্য এসেছি। এটি আমার প্রতিবছরের কাজ। দা-বটি শান দিতে এসে দেখি তেমন ভিড় নেই। তবে গত মৌসুমের চেয়ে এবার মজুরি একটু বেশি।