দেশে সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কে কত বড় শক্তিশালী আমি দেখবো।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিকেল ৪টায় গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। ব্রিকস সম্মেলনে যোগদান পরবর্তী এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সিন্ডিকেট নিয়ে দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না এটা কোনো কথা নয়। কে কত বড় শক্তিশালী আমি দেখবো। সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না এমন কিছু বাণিজ্যমন্ত্রী বললে তাকে আমি ধরবো।
উৎপাদন বাড়িয়ে এবং বিকল্প ব্যবস্থা করে সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
‘নির্বাচনে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকবে’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণটা কার? ভোট চোরদের, ভোট ডাকাতদের, খুনি, জাতির পিতার হত্যাকারী, ২১ আগস্টের হামলাকারীদের? এদের মানুষ চায়? এদের প্রতি তো মানুষের ঘৃণা আছে। ২০০৮ সালে প্রমাণ হয়েছে। আমার কাছে অংশগ্রহণ বলতে, জনগণের অংশগ্রহণ। সেটা থাকবে। জনগণ ইতিমধ্যে সব নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশে যখন গেলাম, যার সঙ্গে দেখা হয়েছে। বলে, কী করে বাংলাদেশ এত উন্নতি করলো? আর দেশের এরা এটা বলে না। তারা পরশ্রীকাতরতায় ভোগে। আমি ওটা নিয়ে চিন্তা করি না। যতক্ষণ আছি, দেশের জন্য কাজ করে যাবো।
ড. ইউনুস প্রসঙ্গ: ‘এতই আত্মবিশ্বাস থাকলে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়ান কেন’
নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ৩৪ বুদ্ধিজীবীর বিবৃতি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজের প্রতি এত আত্মবিশ্বাস থাকলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়ান কেন?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিবৃতি না দিয়ে তাদের ক্লায়েন্টের জন্য অভিজ্ঞ লোক পাঠাক। তারা কাগজপত্র ঘেঁটে দেখুক, এটা আসলে কী? মামলা তো আমরা করিনি। এনবিআর থেকে আয়কর ফাঁকির মামলা করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত লেবাররা মামলা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি খুঁজে বেড়াচ্ছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান করতে বলেছেন, কিন্তু দুর্নীতিবাজ পছন্দের লোক হলে আবার এগুলো নিয়ে কথা আসছে। কেন? আইন তো তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
নোবেলজয়ী বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে এমন বহু নোবেল বিজয়ী আছেন, যারা পরবর্তী তাদের কাজের জন্য কারাগারে আছেন।
বিবৃতির ফলে আদালত প্রভাবিত হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, আদালত স্বাধীনভাবে চলবে। ভয় পেলে চলবে না। লেবারদের পাওনা তাদের দিতে হবে।
নির্দোষ হলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘বিবৃতি ভিক্ষা’ করতেন না বলেও দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।
ব্রিকস সদস্যপদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী: চাইলে পাবো না, তা না
ব্রিকস সদস্যপদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চাইলে পাবো না, সে অবস্থা না। প্রত্যেক কাজেরই একটা নিয়ম থাকে। আমরা সেটা মেনে চলি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের আগে থেকেই জানিয়েছেন, ধাপে ধাপে নেবেন। পরে সদস্য সংখ্যা বাড়াবেন। আমরা জোর দিয়েছি, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের বিষয়ে। এটাতে যুক্ত হওয়ার লক্ষ্য ছিল, আমরা যুক্ত হয়েছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কিছু চেয়ে পাবে না, সে অবস্থায় নাই। আমরা এখন বিশ্বে বাংলাদেশকে মর্যাদার অবস্থানে নিয়ে গেছি। তারাও জানে, বাংলাদেশ এখন ভিক্ষা চাওয়ার মতো দেশ না। বিরোধীদের মধ্যে হা হুতাশ আছে। তাদের সময়ে বাংলাদেশ ভিক্ষা চাওয়ার মতো অবস্থায় ছিল, এখন নেই।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের সঞ্চালনায় মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, আওয়ামী লীগের নেতারা, সরকারি কর্মকর্তা ও বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিনিধিরা সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন।