আজ বৃহস্পতিবার ২ মে ২০২৪, ১৮ই বৈশাখ ১৪৩১

কারও দয়াদাক্ষিণ্যে পণ্য রপ্তানি করি না: বাণিজ্যসচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : সোমবার ৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:০৭:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, আমরা কারও দয়াদাক্ষিণ্যে পণ্য রপ্তানি করি না। সব নিয়ম মেনে কোয়ালিটি পণ্য আমরা কম দামে দিতে পারি বলেই রপ্তানি হচ্ছে।

 

সোমবার (০৪ ডিসেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে শ্রম অধিকার সংক্রান্ত ন্যাশনাল অ্রাকশন প্ল্যানের (এনএপি) বাস্তবায়ন আগ্রগতি পর্যালোচনার লক্ষ্যে আয়োজিত এক বিশেষ সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

 

এ সময় শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এহছানে এলাহী ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

 

বাণিজ্য নিয়ে ইউরোপীয় কমিশনের প্রতিবেদনের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে বাণিজ্যসচিব বলেন, আমরা প্রায় ২০০ দেশে পণ্য রপ্তানি করি। তার মধ্যে কয়েকটি দেশে খুব বেশি করি, কিন্তু ২০০ দেশে রপ্তানি করি। সুতরাং আমাদের লক্ষ্য থাকবে কীভাবে প্রতিযোগিতা মূল্যে কমপ্লায়েন্স অর্জন করে এবং ক্রেতার রিকয়্যারমেন্ট পূরণ করেই কিন্তু রপ্তানি করতে হয়। আমরা কারও দয়াদাক্ষিণ্যে রপ্তানি করি না। আমাদের শ্রমিক, উদ্যোক্তরা অনেক পরিশ্রম করেন। সব নিয়ম মেনে কোয়ালিটি পণ্য আমরা কম দামে দিতে পারি বলেই রপ্তানি হচ্ছে।

 

তিনি বলেন, আমাদের রপ্তানি বাজার যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য যা যা করনীয় তা আমরা করব আমাদের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ে। আমাদের অর্থনীতির সক্ষমতা, রপ্তানি পরিস্থিতি সবকিছু দেখে এবং আন্তর্জাতিক যে রিকয়্যারমেন্ট আমাদের মানতে হবে, সেটা মেনেই আমরা করব।

 

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমরা ২৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করি, সেটা শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায়। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করি, কিন্তু সেখানে কোনো শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায় না। পৃথিবীর মধ্যে বলা যায় অনেক বেশি শুল্ক দিয়ে বাংলাদেশকে রপ্তানি করতে হয়।

 

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পরে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কিছু কমিটমেন্ট ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বা অন্য দেশগুলো দেখতে চায়। সেগুলো বাস্তবায়ন কীভাবে করা যায়, সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। ইতোমধ্যে আমরা অনেক ক্ষেত্রে উন্নতি করেছি। সম্প্রতি বাংলাদেশ শ্রম আইনে বেশ সংশোধনী আনা হয়েছে। বেজা বা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ আইন-২০১০-এ সংশোধনী আনা হয়েছে। এগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বক্তব্য ছিল বা তাদের কিছু চাওয়া ছিল, সেগুলো পূরণ করার জন্যেই এই সংস্কার বা আইনের পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে।

 

বাণিজ্যসচিব বলেন, আমরা আলোচনা করেছি, এগুলো তাদের জানানো হবে ভালোভাবে। একই সঙ্গে আমাদের উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার যে পথ চলা সেখানে আরও কী কী করতে হবে বা করা যেতে পারে, সেই বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের স্টেকহোল্ডার এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ-কে বলেছি এর প্রস্তুতি আমাদের নিতে হবে।

 

তিনি বলেন, আমরা গত ১০ বছরে অনেক সংস্কর এনেছি। ২০১০ সাল থেকে ইতোমধ্যে ৩ বার আমাদের শ্রম আইনে সংস্কার আনা হয়েছে। চার বার নিম্নতম মজুরি বোর্ড নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করেছে। সুতরাং আমরা প্রতিনিয়ত সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের যে শিল্পায়ন হচ্ছে, সেখানে যে কর্মপরিবেশ, শ্রম অধিকার এই সবগুলো নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।