ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। শনিবার থেকে নানা পর্যবেক্ষণমূলক কার্যক্রমের পর এবার জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ এটিম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন স্তরের অংশীজনরা অংশ নেন। বৈঠকে সকল সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিলসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া খোলা হয়েছে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম।
সভায় জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় জেলায় ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে পাঁচ লক্ষাধিক লোকের ধারণক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা, ২৯৮ মেট্টিক টন চাল, ২০০ বান্ডিল ঢেউটিন এবং ১৮০ প্যাকেট শুকনা খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ মুহূর্তে উপকূলের লোকজনকে সরিয়ে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা হাতে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় উদ্ধার কাজের জন্য স্থানীয়ভাবে যানবাহন ও স্পিডবোট প্রস্তুত রাখতে হবে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮৬০০ স্বেচ্ছাসেবক, ১০৮টি মেডিকেল টিম, সার্বক্ষণিক মোবাইল টিম আগে থেকেই প্রস্তুত রয়েছে।
এদিকে সিত্রাংয়ের প্রভাবে কক্সবাজারের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে। সমুদ্র কিছুটা উত্তাল। জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় পর্যটকদের নিরাপদ দূরত্বে থেকে সৈকত ভ্রমণের জন্য সতর্ক করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ, লাইফ গার্ড ও বিচ কর্মীরা। কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন যাতায়াতের একমাত্র জাহাজ এফবি কর্ণফুলী আগামী তিনদিনের জন্য বন্ধ ঘোষনা করেছে জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষ।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আবদুল হামিদ জানান, সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গভীর নিম্নচাপটি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ এখন ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরের সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।