এসএসসি-৭১ ব্যাচের সতীর্থদের মিলনমেলা বর্ণাঢ্য আয়োজনে সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রাঙ্গণে রেজিষ্ট্রেশন, অভ্যর্থনা ও উপহার সামগ্রী বিতরণের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধকালে এসএসসি ব্যাচের বন্ধুদের সম্মিলনের কার্যক্রম আরম্ভ হয়। দিনব্যাপী কর্মসূচীর শুরুতে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পতাকা ও সতীর্থ’৭১ এর পতাকা উত্তোলন করেন সাবেক এমপি, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টি (জেপি)এর প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচ সালাহউদ্দিন মাহমুদ।
তারপর সতীর্থ’৭১ এর র্যালী শেষে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মিলনায়তনে আলোচনা সভা আনুষ্ঠিত হয়।
সতীর্থ-৭১ মিলনমেলা বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, আমাদের বলা মসিবত এখনো কাটে নি। রোহিঙ্গা সংকট প্রকট। বাংলাদেশ তো এক ইঞ্চিও বাড়বে না। ১৯৭০ সালে ফেয়ার নির্বাচনে জিতেছি। আমি কারচুপি করি নি। সেটা বিশ্বাসও করি না।
কক্সবাজারে পর্যটক নারী ধর্ষণের ঘটনা খুবই ‘লজ্জাজনক ও ক্ষতিকর’ মন্তব্য করেছেন মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী। তিনি দুঃখ করে বলেন, কেন এমন হলো? কারা ঘটনা করলো? ঘটনাকে যেন ‘স্টোরি’ না বানায়। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে বিচার হোক। অপরাধীরা উপযুক্ত শাস্তি পাক।
আমরা গোঁতাগুতির বাংলাদেশ চাই না মন্তব্য করে প্রধান অতিথি বলেন, কিসের জন্য গোঁতাগুতি? বিভেদের জন্য দেশ স্বাধীন হয় নি, যুদ্ধ করি নি। আমরা শান্তি চাই। পৃথিবীতে সভ্য জাতি হিসেবে বাঁচতে চাই। আমাদের সন্তানেরা যেন কুশিক্ষা না নেয়। আগামীর প্রজন্মকে নৈতিকভাবে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক বিভাজন ছিল। থাকবে। এরই মাঝেও আমরা অকে দূর এগিয়ে গেছি। কারো ভালো লাগুক না লাগুক, দেশের স্বার্থে শেখ হাসিনাকে আরেকবার ক্ষমতায় রাখা দরকার। কারণ, আরেকজন শেখ হাসিনা জন্ম নিবে না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির স্মৃতিচারণমূলক বক্তৃতা দেন সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য সতীর্থ-৭১ কানিজ ফাতেমা মোস্তাক। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও আজকের বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এএইচ সালাহউদ্দিন মাহমুদ।
কবি রুহুল কাদের বাবুল ও মকবুল আহমেদের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভা শেষে লেখক, সাহিত্যিক ও গ্রন্থকার বেগম রুশনে আরা রশীদ রচিত ‘জীবনের কথকতা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।
মিলনমেলায় কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সুনামগঞ্জ, গোপালগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলার প্রায় একশ সতীর্থ অংশগ্রহণ করেন। সতীর্থদের মধ্যে উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, কবি-সাহিত্যিক, মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন। মিলনমেলায় সতীর্থদের স্ত্রী, সন্তান ও পোষ্যরাও আনন্দের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন।
সতীর্থদের স্মৃতিচারণ, আড্ডা, কবিতাপাঠের আসর ও সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।