গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, পৃথিবীর খুব কম দেশেই ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইভিএম পদ্ধতি জনগণের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। সাধারণ মানুষের ধারণা, তারা যে প্রতীকে ভোট দিন না কেন তা নির্দিষ্ট একটি প্রতীকে গণনা হয়।
রোববার (৫ জুন) দুপুরে যশোর সদরের লেবুতলা ইউনিয়নের লেবুতলা গ্রামে গণস্বাস্থ্য লেবুতলা হাসপাতালের জন্য নির্ধারিত স্থান পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সাবেক সিইসি যথার্থই বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচন বিএনপিসহ সব দলের উপস্থিতি ছাড়া কার্যকর হবে না। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসা করি না বলেই আমরা কম পয়সায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারছি।
বাংলাদেশে স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসা করা যাবে না, যেমন ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করা যায় না। দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ খুবই অনটনের মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে আগামী ঈদে তাদের কোনও আনন্দ থাকবে না। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র তার সীমিত সাধ্যের মধ্যে ২০ হাজার গরিব মানুষের মধ্যে চাল, ডাল, আটা, তেল, আলু ইত্যাদি সরবরাহ করবে জানিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় এটি খুবই সামান্য। সরকারের প্রতি আহ্বান, কম আয়ের দুই কোটি মানুষের জন্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হোক। এ বছর ৫৩ হাজার হাজি হজব্রত পালন করবেন। তিনি হাজিদের প্রতি অনুরোধ করে বলেন, তারা যেন ১০ হাজার করে টাকা দান করেন। এতে ঈদে প্রায় ছয় লাখ মানুষের মুখে হাসি ফুটবে। আগামী বাজেটের বিষয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমাদের বড় দেশ, তাই বাজেটের আকারও বড় হবে এটাই স্বাভাবিক। শুধু অপচয়টি কমাতে হবে। বিদ্যুৎ আজ ঘরে ঘরে এটি সত্যি, সে কারণে প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ পেতেই পারেন। কিন্তু কুইক রেন্টাল কেন পুষতে হবে, এটি অপচয়।
ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকেন, সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, গত ১৩ বছরে নিজ দলের নেতাকর্মীরাও তার কাছে পৌঁছাতে পারেননি। সে কারণে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের আওয়াজ তুলতে হবে। প্রদেশ হলেও মানুষ তার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দুঃখ-কষ্টের কথা বলতে পারে। এরপর বিকালে তিনি বাঘারপাড়া উপজেলার কয়েলখালী গ্রামে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আরেকটি হাসপাতালের নতুন জায়গা পরিদর্শনে যান। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে উপস্থিত ছিলেন নারীপক্ষের সদস্য শিরিন হক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী ডা. মনজুর কাদের, লেবুতলা গ্রামের জমিদাতা মৃত শুভাংশু শেখর খাঁর স্ত্রী কল্পনা রানী খাঁ এবং মৃত অরুণ কুমার খাঁর স্ত্রী অরুণা রানী খাঁ, ওই গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
ভাংশু শেখর খাঁ ও তার ভাই অরুণ খাঁর পক্ষে তাদের স্ত্রীরা টিনশেড ঘরসহ ৫৫ শতক জমি হাসপাতালের অনুকূলে রোববার রেজিস্ট্রি করে দেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষে ট্রাস্টি ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জমি গ্রহণ করেন। আগামী জুলাই মাসে লেবুতলায় হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু এবং সামনের বছরের জুন মাস নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হবে বলে এ সময় জানানো হয়।