আজ বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আনোয়ারায় নকল কারখানায় কাপড়ের রঙে তৈরি হয় আইসক্রিম

নিজস্ব প্রতিবেদক, আনোয়ারা : | প্রকাশের সময় : সোমবার ২৪ জুন ২০২৪ ১০:২৯:০০ অপরাহ্ন | দক্ষিণ চট্টগ্রাম

কাপড়ের রং আর কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করে আইসক্রিমসহ বিভিন্ন শিশু খাদ্য। এসব আইসক্রিমে লেভেল লাগিয়ে পাইকারী দরে বিক্রি করে বিভিন্ন দোকানে। এসব খেয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ। চট্টগ্রামের আনোয়ারার একটি অনুমোদনহীন আইসক্রিম কারখানায় অভিযান চালালে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।

সোমবার (২৪ জুন) বিকেলে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের চাতরী চৌমুহনী বাজারে পশ্চিমে এমাবুদ ভবন এলাকায় একটি টিনশেট ঘরে গড়ে উঠা আফিয়া আইসক্রিম ফ্যাক্টরি নামে কারখানায় অভিযান চালান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হোসাইন মোহাম্মদ। এসময় বিএসটিআইয়ের ফারহানা জাহান পারুল, থানার পুলিশের উপ পরিদর্শক জয়নাল আবেদীনসহ পুলিশের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান সূত্র জানা যায়, আইসক্রিম তৈরি করতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-এর অনুমোদন লাগলেও এই কারখানার কোনো অনুমোদন নেই। একটি টিনসিটের ঘরে গড়ে উঠা এ কারখানায় তৈরি হচ্ছিল ডিম্পল মিল্ক ভিটা আইসক্রিম, পাংশার পিপাসা আইসক্রিম ও বস আইসক্রিম, হ্যাপী আইসক্রিম, আইসক্রিম দইসহ বিভিন্ন শিশু খাদ্য। এসব খাদ্য আকর্ষণীয় করতে মেশানো হচ্ছে কাপড়ের রং ও ক্ষতিকর কেমিক্যাল। চিনির পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকর ঘনচিনি, আম ও লিচুর স্বাদের জন্য কেমিক্যাল এবং গরুর দুধের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে ভেজাল গুঁড়াদুধ। অপরিচ্ছন্ন বালতিতে খালি হাতেই মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকারক সব উপকরণ।

এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর এসব আইসক্রিমে বাহারি সব মোড়কে সরবরাহ করা হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন দোকানে। প্রচন্ড দাবদাহে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য শিশুদের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আইসক্রিম মুখে দেয়। এতে শিশুরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন বলেও জানা যায়।

বিএসটিআইয়ের ফারহানা জাহান পারুল বলেন, অভিযানে গিয়ে নকল আইসক্রিম তৈরির প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া ওই আইসক্রিমের কারখানার মালিক কোনো ধরণের কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।

এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হোসাইন মোহাম্মদ বলেন, ওই নকল আইসক্রিমের কারখানায় যে পণ্য তৈরি করা হতো- তার লেবেল, মোড়ক কিংবা বিএসটিআইয়ের কোনো অনুমোদন ছিলো না। পরে কারখানা মালিককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এরআগে উপজেলার কালাবিবি দীঘির মোড় টানেল রেস্টুরেন্টেকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ খাবার তৈরি ও পরিবেশনের অভিযোগে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও মো. ইশতিয়াক ইমন।