আজ শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সন্দ্বীপে বিদ্যুৎতের ভেলকিবাজিতে অতিষ্ঠ জনজীবন

ইলিয়াছ সুমন, সন্দ্বীপ : | প্রকাশের সময় : বুধবার ৩ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:২৯:০০ অপরাহ্ন | উত্তর চট্টগ্রাম

চলছে পবিত্র রমজান মাস এ রমজানে মুসলিম জাহানের লোকজন ধর্মকর্মে ব্যস্ত থাকে ,  সারাদিন রোজা রেখে একটু শান্তি মানুষ,  রমজানের শুরুতে সন্দ্বীপে  কোনোভাবেই থামছে না  বিদ্যুতের লোডশেডিং। বিদ্যুতের ভেলকিবাজি সহ্যসীমা অতিক্রম করেছে। কারণে অকারণে ঘন্টারপর বিদ্যুৎবিহীন থাকছে সন্দ্বীপ বাসী।  রমজানের এই গরমে সেহরি ও ইফতার সময়ে অনেক সময় বিদ্যুৎ থাকে না,  বিদ্যুতের এই অসহ্য ভোগান্তি জনবিস্ফোরণের পরিণত হয়েছে। ২০১৮ সালে সরকার ১৪৪ কোটি টাকা ব্যায় করে সন্দ্বীপ বাসীকে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে সাগরের তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ দেয়। সে থেকে সন্দ্বীপবাসী  নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবার দাবি করে আসলেও ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলছে না গ্রাহকদের। ঝড়-বৃষ্টিতে বিদ্যুৎ না থাকা এখানে স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্ত ইদানিং আকাশে মেঘ উঠতেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সাংস্কৃতি চালু হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীলদের মোবাইল ফোনও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিদ্যুৎ নিয়ে ধোঁয়াশা আর ভোগান্তির মধ্যে উপজেলার ৩৮ হাজার গ্রাহক।

দৈনিক ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৮/১০ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না। রমজানে  এই ৮/১০  ঘন্টার বিদ্যুৎ স্থির হচ্ছেনা। একবার বিদ্যুৎ এসে ২০ মিনিট থাকলেও এ সময়ের মধ্যে অন্তত ২/৩ বার আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকে।  ঝড়বাদলের রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হলে আর চালু হওয়ার কোনো আশাই থাকে না। সব মিলিয়ে বিদ্যুতের একটানা বেহাল দশায় গ্রাহকরা ক্ষুদ্ধ-বিরক্ত। শুধু তাই নয় ঘনঘন লোডশেডিং আর লো-ভোল্টেজে অতিষ্ঠ সন্দ্বীপবাসী । ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিংয়ের কারণে বিদ্যুৎ নির্ভরশীল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বাণিজ্যিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে বাসা বাড়িতে ফ্রিজে রাখা শিশু খাদ্যসহ মাছ-মাংস ও কাঁচা তরকারী। দেখা যাচ্ছে যতক্ষণ বিদ্যুৎ থাকে সে সময়ে লো-ভোল্টেজ থাকায় বিদ্যুৎ নির্ভরশীল ব্যাংক-বীমা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে গ্রাহকরা অতিষ্ঠ হয়ে পরে এবং ঘন্টার পর ঘন্টা কর্ম সময় নষ্ট হচ্ছে তাদের। 

কম্পিউটার ও ফটোস্ট্যাট দোকানে আসা গ্রাহকরা সময়মত কাজ করতে না পেরে ধৈর্যহারা হয়ে পড়েছে। নষ্ট হচ্ছে তাদের মূল্যবান সময়। সন্ধ্যা হলেই শুরু হয় লোডশেডিং এ যেন নিত্যদিনের রুটিন। পাঁচ সাত বছর আগে ও সন্দ্বীপে প্রতি ঘরে হারিকেন ও বার্তি থাকত কিন্তু পরবর্তী বিদ্যুৎ আসার ফলে হারিকেন বার্তি কার ও ঘরে নেই, এর ফলে বিদ্যুৎ লোডশেডিং হলে হারিকেন বার্তি পাওয়া যায় না, বাজারে মোমবাতি ও সংকট ফলে ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়া সমস্যা হচ্ছে। 

আর কদিন পরে ঈদুল ফিতর এতে ব্যাবসয়ীরা সারাবছর তাকিয়ে থাকে ঈদুল ফিতরের ভাল ব্যাবসা করবে কিন্তু বিদ্যুৎ লোডশেডিং তারা ও ক্ষুদ্ধ সরোজমিনে গিয়ে উপজেলার শিবের হাট, আকবর হাট, ধোপার হাট, পন্ডিতের হাট, নাজির হাট, তালতলী, কমপ্লেক্স, সেনের হাট, এনাম নাহার, গুপ্তছড়া বাজারের বস্র ব্যাবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায় 

বিদ্যুৎ না থাকায় ক্রেতা সংকটে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। করোনা পরবর্তী সময়ে বৈশ্বিক নানা সংকটের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় বাগড়া দিচ্ছে লোডশেডিং। ছুটির দিনেও বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারে অলস সময় পার করছেন তারা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দিনে-রাতে প্রায় ১২ ঘন্টা লোডশেডিং। দিনের বেলায়  অতিরিক্ত লোডশেডিং হওয়ায় ক্রেতারাও আসছেন না। ফলে কমে গেছে কেনাবেচাও। এনাম নাহার মোড়ের প্রেস ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন গনগন লোডশেডিং তার উপরে লো- ভেল্টেজের কারণে আমার একটি ফটেকপি মেশিন ও একটি কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেছে, সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ কবির হোসেন বলেন থানা হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনের অংশ কিন্তু বিদ্যুৎ লোডশেডিং এর কারণে আমরা স্বাভাবিক কোন কাজ করতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সন্দ্বীপ বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন বিদ্যুৎ লোডশেডিং এখন সারাদেশে জাতীয় গ্রীড থেকে হচ্ছে, সন্দ্বীপে গ্রাহকদের নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ পেতে হলে আরেকটু ধোর্য ধরতে হবে, বিভিন্ন স্হানে আমাদের খুটি ও সংযোগের কাজ চলছে,   আমাদের এক্সচেঞ্জ যেভাবে নির্দেশনা দেয়া আমরা গ্রাহকদের  ঐভাবে বিদ্যুৎ দিতে হচ্ছে।