আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ এবং চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রতিবাদ সমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ হাটহাজারী উপজেলা শাখা।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর)জুমার নামাজের হাটহাজারী ডাকবাংলো চত্ত্বরে উপজেলা হেফাজতের সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ আলী কাসেমীর সভাপতিত্বে, উপজেলা হেফাজতের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এমরান সিকদার ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আসাদুল্লাহ আসাদের যৌথ সঞ্চালনায় উক্ত প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, ইসকন একটি আন্তর্জাতিক উগ্রপন্থী জঙ্গি সংগঠন। সর্বশেষ আদালতের কাজে বাধা প্রদান এবং রাষ্ট্রপক্ষের একজন স্বনামধন্য আইনজীবীকে আদালত প্রাঙ্গনে নির্মমভাবে হত্যা করে তার প্রমাণ দিয়েছে সংগঠনটি৷ সুতরাং সরকারের প্রতি আমাদের দাবী,এ মুহূর্তে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করা এবং আইনজীবী হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা। দাবি আদায়ে প্রয়োজনে আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন বক্তারা।
বক্তারা আরো বলেন, ইসকন শুধু জঙ্গি সংগঠন নয়; বরং এটি রাষ্ট্রদ্রোহী সংগঠন। তাদের কার্যক্রম দেখে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী নয়। ভিনদেশী এজেণ্ডা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এই সংগঠন।
সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া সন্ত্রাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ওরফে চন্দনধর একজন সাম্প্রদায়িক, ভূমিদস্যু এবং দেশদ্রোহী। হাটহাজারীর পুন্ড্ররিকধামে ধর্মীয় আচার শিখানোর নামে সে শিশু-কিশোরদের যৌন নির্যাতন চালানোর অসংখ্য প্রমাণ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তাছাড়া সেখানে পতিত ফ্যাসিস্টের লালিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা আশ্রয় নিয়েছে মর্মে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি নিশ্চিত করার এবং পুন্ড্ররিকধামে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনার দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়াও চিন্ময় দাসের গ্রেফতার নিয়ে ভারতের নিন্দা প্রকাশের সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে কাকে গ্রেফতার করবে, কাকে ছাড়বে এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। এখানে ভিন্ন কোনো রাষ্ট্র মাথা ঘামানোর অধিকার রাখেনা। একজন রাষ্ট্রদ্রোহীর পক্ষে কথা বলে ভারত এ দেশে ঔপনিবেশবাদ কায়েম করতে চায়।
বক্তৃতায় হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী উপজেলার সভাপতি মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আলী কাসেমী বলেন, এ দেশে আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজীর স্থাপন করেছি৷ অথচ ভারতে মুসলমানরা যুগ যুগ ধরে নির্যাতিত-নিষ্পেষিত। ভারত নিজের দোষ ঢাকতে এ দেশে সংখ্যালঘুর খেলা খেলতে চাইছে। বাংলার জমিনে এ খেলা কখনোই সফল হবে না ইনশাআল্লাহ।
সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এমরান সিকদার বলেন, বিতাড়িত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার বিভিন্ন চক্রান্তের মাধ্যমে এ দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে অন্তরবর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করে আবারো দেশে ঢোকার পায়তারা করছে৷ আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে তা হতে দেবো না।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আমরা সবসময় শান্তির পক্ষে৷ আমরা চাই হিন্দু-মুসলমান মিলে সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ি। কিন্তু উগ্রপন্থী ইসকন এই শান্তির পথে বারবার অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ দেশকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নিতে হলে সংগঠনটি নিষিদ্ধ করা সময়ের দাবি।
কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল জনাব আব্দুর রহমান চৌধুরী বলেন, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ ভাই দিল্লি বিরোধী যুদ্ধের প্রথম শহীদ। আমরা মৃত্যুকে ভয় পাইনা৷ তার রক্ত বৃথা যেতে দিবোনা। আলিফ ভাইয়ের শাহাদাতের মাধ্যমে যে দাবানল জ্বলে উঠেছে, তা দিল্লি পর্যন্ত গড়াবে।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে তারা মিছিল করে ডাকবাংলো থেকে বাসস্ট্যান্ড, কলেজ গেইট হয়ে হাটহাজারী মাদ্রাসার সামনে এসে দুয়ার মাধ্যমে সমাপ্ত করেন। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরাপত্তা দিতে দেখা যায়।
উক্ত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম মেহেদী ,, মাওলানা শফিউল আলম, জনাব নূর মোহাম্মদ, মাওলানা হাফেজ আব্দুল মাবুদ, জনাব মোরশেদ আলম, মাওলানা, এডভোকেট মোহাম্মদ ইসমাইল, হাফেজ আমিনুল হক, মাওলানা জাহাঙ্গীর জাফরাবাদী, জনাব মাওলানা শাহজাহান হাবিবী, জনাব আবু তাহের রাজিব মাওলানা হাফেজ মহিউদ্দিন, জনাব মোঃ রাশেদ , মাওলানা ফোরকান আলী, মাওলানা হাফেজ সাইফুল ইসলাম, মাওঃ মোঃ জিয়াউল হক প্রমূখ।