বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিশেষ করে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্টে একটি রেজ্যুলেশন গৃহীত হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার হতাশা প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ হতাশা প্রকাশ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দুই ‘অধিকার’ কর্মকর্তাকে নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কিছু রাজনীতিবিদের মন্তব্য আদালতের রায়ের হস্তক্ষেপের অভিপ্রায়ের প্রতিফলন। বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার বিভাগ এটি নিশ্চিত করে চলেছে যে, বিচারিক কার্যক্রম খোলামেলা ও ন্যায্যভাবে পরিচালিত হয় এবং পক্ষগুলোর অধিকারকে সম্পূর্ণভাবে সম্মান করা হয়। বাংলাদেশের বিচার বিভাগ তাদের সামনে কোনো প্রকার সীমাবদ্ধতা, প্রভাব, প্রলোভন, চাপ, হুমকি বা হস্তক্ষেপ গ্রাহ্য করে না। বিচার বিভাগ সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এবং আইন অনুযায়ী তাদের সামনে বিচার করে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের রেজ্যুলেশনে প্রতিফলিত পক্ষপাতিত্বের কারণে বাংলাদেশ সরকার হতাশ। কেননা ‘অধিকার’ রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট সংস্থা, যেখানে তাদের ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণিত রেকর্ড রয়েছে। সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থাকে উৎসাহিত করে, এমন স্বার্থান্বেষী মহলের সহযোগী এই সংস্থাটি। এটা সকলের জানা সত্য যে ‘অধিকার’-এর সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খানকে বিএনপি-জামায়াত সরকার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত করেছিল। সেই পদে তিনি ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর কাজ করেছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার ইইউ রেজ্যুলেশনের পাঠ্যের সঙ্গে একমত নয়। বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টসহ-এর সকল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার ৫০ বছরের দীর্ঘ ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বকে গভীরভাবে মূল্যায়ন, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতির ভিত্তিতে অর্থপূর্ণ সম্পৃক্ততার মাধ্যমে অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা করে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।
উল্লেখ্য, এক দশক আগে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে হওয়া মামলায় মানবাধিকার সংগঠন অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও সংস্থাটির পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
বৃহস্পতিবার রায় পর্যবেক্ষণের জন্য বেশ কয়েকটি দূতাবাসের প্রতিনিধি, মানবাধিকার কর্মীসহ বিশিষ্টজনরা আদালতে হাজির হন।