বোয়ালখালীতে আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে জনতা। এছাড়া বেশ কয়েকটি জায়গায় আওয়ামী লীগ নেতার বাসভবন ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
গত সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল থেকে বৃহস্পতবিার অবধি দফায় দফায় এসব ঘটনা ঘটে।
এসময় উত্তেজিত জনতা উপজেলা পরিষদ চত্বরের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভেঙে দেয়। উপজেলা ভূমি অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা, জানলার গ্লাস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয় এবং বাস ভবনে ঢিল ছুঁড়ে জানলার গ্লাস ভেঙে দিয়েছে।
জানা গেছে, সন্ধ্যার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি রেজাউল করিম বাবুলের বহদ্দারপাড়া বাস ভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় পালিয়ে গেলেও তার বাস ভবনের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে একটি লাইসেন্স করা শটগানসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিন গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকায় উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আবদুল মান্নান রানার ব্যক্তিগত অফিসে আগুন দিয়ে মূল্যবান ডকুমেন্টস পুড়িয়ে দেয় হামলাকারীরা। তারা ভাঙচুর চালায় অফিসের আসবাবপত্র। একই স্থানের পৌর মেয়র জহুরুল ইসলাম জহুরের অফিসেও ভাঙচুর হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। শাকপুরা চৌমুহনী বাজারের ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মো.নাছিরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
বিক্ষিপ্তভাবে হামলা হয়েছে খরণদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা শিক্ষক পলাশ বোসের বাড়িতে। তবে তিনি পরিবার নিয়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পেরেছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে পৌর সদরের খায়ের মঞ্জিলের সামনে একটি সীমানা প্রাচীর দেয়া জায়গার পাকা দেয়াল ভাঙচুর করে জায়গা দখলের খবর পাওয়া গেছে। একই এলাকায় অপর একটি মাংসের দোকান ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে জায়গা দখলের ঘটনা ঘটেছে।
কড়ল ডেঙা ইউনয়িনে আলীগ নেতাকর্মীর বাড়ীতে ব্যাপক হামলা হয়েছে।
তবে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে এবং কারো বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা না চালানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো.ইসহাক চৌধুরী। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের দুঃশাসন থেকে এদেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে। এখন এ দেশকে গড়ে তুলতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
গত মঙ্গলবার সকাল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস পাড়া খোলা থাকলেও মানুষ জনের উপস্থিতি ছিলো কম।পৌরসভার কার্যক্রমও ছিলো বন্ধ। গত দুইদিন ধরে দফায় দফায় হামলা হয়েছে বোয়ালখালী পৌরসভা কার্যালয়ে। এতে পৌরসভার উদ্যাক্তার ল্যাপটপ কম্পিউটার, মেয়রের কার্যালয়ের এসিসহ মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে গেছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে পৌর কার্যালয়ে সার্বিক কার্যক্রম। নিরাপত্তার স্বার্থে গেইট বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সেবাগ্রহীতারা। পৌর কার্যালয়ের গেইট বন্ধ থাকায় পৌর কম্পাউন্ডের ব্যবসায়ীরা নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।
এছাড়া মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পৌর সদরের গোমদণ্ডী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্ণার ও প্রতিকৃতি ভাঙচুর করা হয়।
এদিন সকাল ১১ টার দিকে কোটা আন্দোলনকারীদের একটি মিছিল উপজেলা সদর প্রদক্ষিণ করে। বিকেল ৩টার দিকে উপজেলা বিএনপি পৌর সদরে নেতাকর্মীদের নিয়ে সমাবেশ করেছে।