গত তিন দিন বান্দরবান জেলা শহর বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার (১০ আগষ্ট) মধ্যরাত থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। বন্যার পানি নামা শুরু হওয়ার সাথে সাথে ক্ষতিগ্রস্থদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। চরম সংকট দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির। এছাড়াও গত চার দিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বান্দরবান শহর ভুতের নগরীতে পরিনত হয়েছে। বান্দরবানের অভ্যন্তরীর সড়কে পাহাড় ধসে পড়ে জেলা সদরের সাথে রুমা,রোয়াংছড়ি,থানছি,লামা,আলিকদম ও নাইক্ষছড়ির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া টানা ভারী বর্ষনে পাহাড়ী ঢলে সাঙ্গু নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমা অতিক্রম করে রবিবার (৬ আগষ্ট) সকাল থেকে বান্দরবান বাজারসহ জেলা সদরের ইসলাম পুর,আর্মি পাড়া,ওয়াদা ব্রীজ,হাফেজ ঘোনা,বনানী স'মিল,উজানী পাড়া,বালাঘাটা,মেম্বার পাড়া,নিউগুলশান,ষ্টেডিয়াম এলাকার প্রায় ২০ হাজার পরিবারের বসত ঘর পানিতে তলিয়ে যায়। বাদ পড়েনি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বাস ভবন ও জেলা জজ আদালত। বন্যার্থদের জন্য ১৯৩টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলে জেলা প্রশাসন। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ১০ হাজারের অধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার্থদের চিকিৎসা সেবা দিতে ৪৩টি মেডিকেল টিম মোতায়ন করে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। জেলা প্রশাসন,পুলিশ,সেনা বাহিনী ও পৌর সভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মানুষের মাঝে রান্না করা খিচুড়ি, বিশুদ্ধ পানি ও ঔষধ সরবরাহ করেছে।
এদিকে গত ৭ আগষ্ট বেলা ১২ টার দিকে ভারী বর্ষনে পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে জেলা সদর সংলগ্ন গোদার পাড় এলাকায় বাশিঁ শীলের স্ত্রী সন্ধ্যারানী শীল (৫২) মেয়ে বুলু শীল(২২) নিহত হয়েছে। অপর দিকে জেলা সদরের কানা পাড়া এলাকায় একই দিন পাহাড়ী ঝিরি পারাপারের সময় পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয় অজিৎ তংচঙ্গ্যার স্ত্রী ছায়াবি তংচঙ্গ্যা(৩৮)। বৃহস্পতিবার (১০ আগষ্ট) বেলা ১২ টার দিকে সাঙ্গু নদী থেকে নিখোঁজ ছায়াবি তংচঙ্গ্যা লাশ উদ্ধার করা হয়।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে,বুধবার মধ্যরাত থেকে জেলা শহরের নিম্নাঞ্চল থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার(১০ আগষ্ট) সকাল থেকে আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে মানুষ বাড়ীতে ফিরতে শুরু করেছে। পানিতে ডুবে বসত ঘর ও প্রয়োজনী মালামালসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মানুষ বিপাকে পড়েছে মানুষ।