আজ শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাংলার প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী মহামুনি মেলায় পাহাড়ি বাঙালির ঢল

এম কামাল উদ্দিন, রাউজান : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১৪ এপ্রিল ২০২২ ০৯:০০:০০ অপরাহ্ন | উত্তর চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের রাউজানের প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী পাহাড়তলী ইউনিয়নের মুহামুনি গ্রামে বৈশাখী মেলা শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় অবস্থিত এই গ্রামে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে বাংলার প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী মহামুনি মেলা। নতুন বর্ষ কে বরণ করে ও পুরাতন বছরকে বিদায় দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা রাউজানের প্রাচীন ঐতিহাসিক মহামুনি বৌদ্ধ মন্দির প্রাঙ্গনে দলে দলে এসে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করেন এই মেলা ও তাদের উৎসব চৈত্র সংক্রান্তি। প্রতিবছর ১৩ ও ১৪ই এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তি পাহাড়ি বাঙালি দের মিলন মেলায় পরিনত হয় এই গ্রামে। প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো এ মেলা প্রতি বছর চৈত্র্য সংক্রান্তির শেষ দিন থেকে শুরু করে তিনদিনব্যাপী চলতে থাকে। ঐতিহাসিক এ মেলায় চট্টগ্রাম জেলার এবং পার্বত্য আদিবাসী এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এক মিলনমেলায় পরিনিত হয়। রাউজানে মহামুনি মেলাকে ঘিরে প্রতিদিন দর্শনার্থীদের ভিড় জমে থাকে। এই মেলার প্রধান আর্কষণ হলো পানি খেলা। পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসী মেয়েরা বিভিন্ন রকম রং পানি একে অন্যের দিকে ছুড়ে মারে। বর্ষবরণ উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে আলেচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটকসহ গ্রামের মেয়েদের নৃত্যানুষ্ঠানের অংশগ্রহণ ও ব্যাপক আয়োজন করা হয়েছে। গত দুই বছর করোনা মহামারি কারণে এ ঐতিহ্যবাহী মেলা বন্ধ ছিলো। করোনার পরিস্থিতি উন্নতি হওয়া এবার আরোও ফিরে পেয়েছে সেই দুই’শত বছরের ঐতিহ্যবাহী উৎসব। জানা যায়, মন্দিরটিকে কেন্দ্র করে ১৮৪৩ সালে মং সার্কেল রাজা চৈত্র্যের শেষ তারিখে মেলার আয়োজন করেন। পরবর্তী সময়ে মেলাটি মহামুনি মেলা নামে পরিচিত লাভ করে। চৈত্র্য সংক্রান্তির দিন তিন পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পুণ্যার্থীরা সারাদিন অবস্থান শেষে সন্ধ্যায় বুদ্ধের পুণ্য লাভের মধ্য দিয়ে বরণ করে নেয় নতুন বছরকে। একই সাথে তারা সেখানে রাত্রি যাপন করেন। রাউজানসহ পার্বত্য অঞ্চলের জন্য এ মেলা খুবই জনপ্রিয়। সকাল থেকে উৎসবমুখর হয়ে উঠছে মহামুনি। মহামুনি মেলাকে ঘিরে মন্দির চত্বরে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলা, সেখানে বাহারি সামগ্রী, নানা রকম খাদ্য, হরেক রকম মিষ্টি, বাহারি প্রসাধনী, নানা রকম খাদ্যদ্রব্যসহ অসংখ্য দোকান বসেছে এই মহামুনি বৈশালী মেলায়। এ বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান মো: রোকন উদ্দিন বলেন, প্রতি বছর মহামুনি গ্রামে পহেলা বৈশাখ গিরে উৎসব মুখর হয়ে উঠে। সেখানে তিন পার্বত্য অঞ্চলের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাদের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়। গত দুই বছর করোনার কারণে এ মেলা হয়নি। এবার শুরু হয়েছে মেলা। এ উৎসবে যোগ দিয়েছে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও স্থানীয় উপজেলা আসা লক্ষাধিক দর্শনার্থীরা। এ মেলা গিরে আমরা প্রশাসনের হতে আইন শৃংখলা রক্ষার ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। থানা পুলিশ ও গ্রাম পুলিশদের সমম্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে বাড়িতে নিরাপত্তা।