জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রশাসনে আরেক দফা রদবদল ও উপ-সচিব পদে পদোন্নতি আসছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও স্বাস্থ্য সচিবের অবসরজনিত কারণে রদবদল ছাড়াও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগে এপিডির (অতিরিক্ত সচিব) মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে নতুন মুখ আসছে।
আর প্রশাসন ক্যাডারের ২৯তম ব্যাচের ১৯৫ জন কর্মকর্তাকে উপ-সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বিভাগীয় কমিশনার থেকে এপিডি এবং ৮ থেকে ১০ জেলার ডিসিকে মাঠ পর্যায় থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) সভায় এ সুপারিশ বিবেচনায় নেওয়া হয়।
সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) সভায় পদোন্নতির তালিকার বাইরে নিয়মিত ব্যাচ থেকে ১৯৫ জনকে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, এক সময় উপ-সচিব পদে চাকরির ১৭-১৮ বছরে পদোন্নতি হতো। সেই সময় অনেক ব্যাচের কর্মকর্তা পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ কারণে এসব ব্যাচের কর্মকর্তাদের চাকরি জীবনের প্রথম পদোন্নতি পেতে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হয়েছে।
প্রশাসনে সচিবের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল হবে বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার দেশে ফিরলে সচিব পদে রদবদল করা হবে। প্রধানমন্ত্রী ফিরলে রদবদলের বিষয়ে জনপ্রশাসন থেকে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শুরু হবে। চলতি সপ্তাহে বা আগামী সপ্তাহে রদবদল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৩ অক্টোবর। তাকে এক বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। তবে কোনো কারণে যদি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া না হয়, সেক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী হবেন পরবর্তী নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৯ অক্টোবর। বর্তমানে কর্মরত সচিবদের মধ্য থেকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে সচিব নিয়োগ দেওয়া হবে বলে গুঞ্জন রয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম অথবা খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেনকে এ মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।
সম্প্রতি সচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া ১৩তম ব্যাচের মো. আব্দুর সবুর মণ্ডলকে একই সময়ে নিয়োগ দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যিনি নিয়োগ পাবেন, তার খালি হওয়া মন্ত্রণালয়ে সবুর মণ্ডলের নিয়োগ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি এখন পর্যন্ত তার পূর্বের পদে সংযুক্তি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়াও, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগে এপিডির (অতিরিক্ত সচিব) পদে ১৫তম ব্যাচের কয়েকজন অতিরিক্ত সচিবের নাম আলোচনায় রয়েছে। রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান, স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিকল্পনা, পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও পরিদর্শন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ডা. মো. সারোয়ার বারী, মালয়েশিয়ায় বিদেশস্থ মিশনে কর্মরত নাজমুস সা’দত সেলিম, সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন) মাহবুব আলম তালুকদার, অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (ব্যয় ব্যবস্থাপনা) মো. মফিদুর রহমান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মহিদুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক সারোয়ার আলম, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম এবং বিমানের এমডি শফিউল আজিম এবং এপিডি উইংয়ে কর্মরত অতিরিক্ত সচিব সায়লা ফারজানার নাম শোনা যাচ্ছে।
এদিকে, মাঠ প্রশাসনের জেলা প্রশাসক পদে ৮ থেকে ১০ জনকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। তারা ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে রাজশাহী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে তুলে নেওয়া হতে পারে।