৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর উপকূলের পাশেও মিলছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। দিনের দিনই মাছ নিয়ে ফিরছে অনেক ট্রলার। সোমবারও (২৫ জুলাই) কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে এসেছে সাড়ে সাত মেট্রিক টন ইলিশ। তবে মাছের আড়ত ও ফিশারিঘাট ইলিশে ভরে গেলেও দাম এখনো সাধারণের নাগালের বাইরে। নিষেধাজ্ঞার পর রবি ও সোমবার দুইদিনে ধরা পড়েছে ৩২ টন মাছ। এর মধ্যে সাড়ে ১৯ টনই ইলিশ। বাজারে মিলছে ৮০০ থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ।
ব্যবসায়ী ও জেলেদের তথ্যমতে, ফিশারিঘাটে পাইকারিতে ১২০০-১৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরে।
সোমবার দুপুরে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। আর ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৭৫০ টাকায়।
কক্সবাজার সদর উপজেলা বাজারের খুচরা মাছ ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, ১২-১৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকা কেজি দরে। ৬০০ গ্রামের ওপরে ৮০০ গ্রাম পর্যন্ত ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। কেজিতে ২-৩টি ধরে এমন ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকায়। আরও ছোট সাইজের কেজিতে চারটি ধরে এমন মাছের দাম ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কক্সবাজার বড় বাজারে মাছ কিনতে আসা সেলিম উল্লাহ বলেন, রোববার প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছে- এমনটি টেলিভিশন ও পত্রিকায় দেখে বাজারে এসেছি। যেহেতু ইলিশ বেশি ধরা পড়ছে তাই দাম কম হবে আশা করেই বাজারে এসেছিলাম। কিন্তু আশাহত হলাম। বড় একটি ইলিশ কেজিতে দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা চাচ্ছে। ছোট সাইজের ইলিশও ৮০০ টাকা কেজি। এত বেশি দামে ইলিশ কেনা সম্ভব হয়নি।
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ম্যানেজার আহসানুল হক বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রথমদিনে সাড়ে ১৬ টন মাছ এসেছে। আশা ছিল, সোমবার আরও বেশি মাছ আসবে। কিন্তু সেটা হয়নি। সোমবার ইলিশসহ মাছ এসেছে সাড়ে ১৫ টন। এর মধ্যে ইলিশ হলো সাড়ে সাত টন। রোববার আসা সাড়ে ১৬ টনে ১১ টন ৭০০ কেজি ছিলো ইলিশ। প্রথমদিন প্রায় ইলিশের ওজন ছিল ৬০০-৭০০ গ্রাম। সোমবার পাওয়া ইলিশের ওজন ৮০০ থেকে ১৫০০ গ্রামের মধ্যে ছিল।
কক্সবাজার ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ বলেন, দুমাস পাঁচদিনের নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগেও কক্সবাজার উপকূলে ইলিশের খুব একটা দেখা পাননি জেলেরা। সোমবার বড় ইলিশ ধরা পড়েছে। জেলায় ছোট-বড় মাছ ধরা ট্রলার আছে প্রায় ছয় হাজার। এসব ট্রলার নিয়ে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার জেলে-শ্রমিক সাগরে গেছেন। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে মৎস্য বিভাগের নিবন্ধিত ৬৩ হাজার ১৯৩ জেলে পরিবারগুলো ৫৬ কেজি করে চাল পেলেও অনিবন্ধিত জেলে পরিবারে কিছুই জোটেনি। এখন মাছ মিলছে, সেসব পরিবারের আর্থিক সমস্যা দূর হবে বলে আশা করছি।