সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বলেছেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান আইনের দৃষ্টিতে পলাতক। দুর্নীতির মামলা বাতিলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ (ক) ধারায় করা তার আবেদন শুনে ও আদেশ দিয়ে আইনানুযায়ী হাইকোর্ট ভুল করেছেন।
‘ডা. জোবায়দা রহমান বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য’ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ। রায়টি লিখেছেন বিচারপতি বোরহানউদ্দিন। রায়ে একমত পোষণ করেছেন প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
রায়ে বলা হয়েছে, দুর্নীতির মামলায় জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়নি বিচারিক আদালত। যেখানে অভিযোগ আমলে নেয়নি সেখানে কি করে উনি মামলা বাতিল চেয়ে ৫৬১ (ক) ধারায় আবেদন করেছেন। আর যখন আবেদনটি করেছেন তখন উনি আইনের দৃষ্টিতে পলাতক।
আইনের দৃষ্টিতে একজন পলাতক ব্যক্তির করা ওই আবেদন শুনে মামলার বিচারকাজ স্থগিতের পাশাপাশি রুল জারি করেছেন হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ। আমরা মনে করি হাইকোর্টের এ ধরনের আদেশ প্রদান আইনানুযায়ী সঠিক ছিল না। কারণ আইনের দৃষ্টিতে পলাতক ব্যক্তির আইনি প্রতিকার চাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আপিল বিভাগ রায়ে বলেছেন, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকরা ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে ও পক্ষপাতিত্বের আশ্রয় না নিয়ে বিচার কাজ পরিচালনার শপথ নিয়েছেন। যে কোনো পরিস্থিতিতে বিচার বিভাগ এই নীতিতে অবশ্যই অটল থাকবে। বিচার বিভাগ এমন কোনো নজির সৃষ্টি করবে না যা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
রায়ে আপিল বিভাগ আরও বলেছেন, প্রত্যেক নাগরিকের আদালত থেকে সমান বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কারণ আইনের দৃষ্টিতে কেউ বড় বা ছোট নয়- সবাই সমান।