আজ শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
কক্সবাজার জেলা জজের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত

জামানত হারাবে পলাতক আসামি, খালাস পেলে মিলবে টাকা

ইমাম খাইর, কক্সবাজার : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২৬ জুলাই ২০২২ ০৬:৫৯:০০ অপরাহ্ন | কক্সবাজার প্রতিদিন

কক্সবাজারের বিভিন্ন আদালতে মাদকের মামলায় জামিনপ্রাপ্ত আসামিদের নিকট থেকে চার মাসে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা জামানতের অর্থ আদায় করা হয়েছে। গত মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত আদায়কৃত এসব অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা রয়েছে। জামিনপ্রাপ্ত আসামি পলাতক থাকলে জামানতের টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে। বিচারে আসামি খালাস পেলে জামানতের টাকা ফেরত পাবে। 

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির বেদারুল আলম এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তার দেয়া তথ্য মতে, আদায়কৃত জামানতের অর্থের মধ্যে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে ২ কোটি ৯১ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আবদুল্লাহ আল মামুন এর আদালতে ২১ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা, কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর মোহাম্মদ ফারুকীর আদালতে ১৮ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা এবং কক্সবাজারের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-১ মাহমুদুল হাসানের আদালতে ২০ হাজার টাকা।

উচ্চ আদালত ও কক্সবাজার বিচার বিভাগের ৪ টি আদালতে মাদকের মামলায় জামিন পাওয়া আসামিদের নিকট থেকে ‘জামিনের শর্তস্বরূপ’ আদায়কৃত অর্থ রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জেলা নাজির বেদারুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, চলতি বছরের ৮ মার্চ থেকে গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করা হয়েছে। জামিনপ্রাপ্ত আসামীরা জামিন নিয়ে যাতে পলাতক না হয়, সেজন্য আসামিদের কাছ থেকে জামানতের অর্থ নেওয়ার এ যুগান্তকারী বিধানটি চালু করেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।

এ বিধানে জামিন প্রাপ্ত আসামী আদালতে জামিননামা দাখিল করার সাথে জামানতের অর্থ সরকারী কোষাগারে জমা করে জমা করার চালানের কপি জামিননামার সাথে আদালতে দাখিল করতে হয়। জামিনপ্রাপ্ত আসামীদের অধিকাংশই হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা মতে কক্সবাজারের বিভিন্ন আদালতে জামিননামা সম্পদনের সময় প্রচুর পরিমাণে জামানতের অর্থ আদায় করা হয়েছে।

নাজির বেদারুল আলম আরো বলেন, জামিনপ্রাপ্ত আসামি পলাতক হলে জামানত বাবদ রাষ্ট্রের কোষাগারে জমাকৃত অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হবে। মামলা নিষ্পত্তির পর আসামী খালাস পেলে জামানতের অর্থ সংশ্লিষ্ট আসামীকে ফেরত প্রদান করা হবে।

আসামিকে জামিন প্রদানের অন্যান্য শর্তের সাথে জামানত নেওয়ার বিধানটি একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।

তিনি বলেন, এই বিধানের ফলে জামিনপ্রাপ্ত আসারিরা পলাতক হওয়ার আশংকা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। এতে একদিকে রাষ্ট্রের কোষাগার সমৃদ্ধ হবে, অন্যদিকে মামলা নিষ্পত্তিতে আদালতকে অহেতুক বিড়ম্বনা পোহাতে হবেনা। অপেক্ষাকৃত কম সময়ে মামলা নিষ্পত্তি করা যাবে বলে জানান পিপি ফরিদুল আলম।