হাটহাজারীতে নিজ উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ করে পুরস্কারের বদলে ‘তিরস্কার’ শাস্তি পেয়ে আলোচিত তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রুহুল আমীনকে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগের শাস্তি থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ০৩ এপ্রিল ২০২৪ তারিখের ১৩৪ নম্বর প্রজ্ঞাপনটি বাতিলপূর্বক তাকে অভিযোগের দায় হতে অব্যাহতি প্রদান করা হলো’।
মোহাম্মদ রুহল আমীন বর্তমানে বাংলাদেশ চা বোর্ড, চট্টগ্রামে সচিব (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০১৯ ও ২০২০ সালে হাটহাজারী উপজেলার সাবেক এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দম্পতি ব্যক্তিগত খরচে বিভিন্ন স্কুল ও সড়কের পাশে ৩০ হাজার বৃক্ষরোপণ করেন।
২০২১ সালে এই দম্পতিকে বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার-২০২০ এর জন্য মনোনীত করা হলেও পরে তাদের বাদ দিয়ে পদক দেওয়া হয়েছে হাটহাজারী উপজেলা পরিষদকে। অথচ উপজেলা পরিষদ বৃক্ষরোপণ করেনি, এমনকি পদকের জন্য আবেদনও করেননি।
২০২২ সালের ২৮ মে রুহুল আমীন পুরস্কারের বিষয়ে বিস্তারিত লিখে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পত্র দেন। বৃক্ষরোপণে একজনের পুরস্কার আরেকজনের কাছে দেওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে সে সময় ফলাও করে প্রচার হয়। ওই ঘটনার প্রায় দুই বছর পর গত ৩ এপ্রিল মোহাম্মদ রুহুল আমীনকে ‘তিরস্কার’ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ ঘটনা সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরে গত ৬ মে যথাযথ কারণ দেখিয়ে রুহুল আমীন বিভাগীয় মামলায় আরোপিত দণ্ডাদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। আবেদন আমলে নিয়ে জনস্বার্থে বৃক্ষরোপণ করায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
৩ এপ্রিল মোহাম্মদ রুহুল আমীনকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮–এর ৩(খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে তিরস্কার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তিনি দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিলের জন্য মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও সাক্ষীদের অপুলিপি চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। কিন্তু ২২ এপ্রিল এক চিঠিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও সাক্ষীদের অপুলিপি সরবরাহ করা সম্ভব নয় বলে জানায়। পরে তিনি ওই সকল তথ্য ছাড়াই নিজস্ব প্রমাণসমূহ দিয়ে তাঁর ওপর আরোপিত দণ্ডাদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন রাষ্ট্রপতির কাছে।