চন্দনাইশ উপজেলার বরকল ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বোর্ড খালের শেষাংশ ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের ফলে ২/৩ হাজার একর বোরো ধান ব্যাহত হওয়ার আশংঙ্খা বিরাজ করছে। ফলে হাজার হাজার কৃষক আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছেন। অন্যদিকে বরকল ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা নিয়ে আদালতে মামলা থাকলেও বিরোধ নিস্পত্তি না হওয়ার আগেই প্রভাবশালী ব্যক্তি সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে পূজি করে রাতদিন কাজ করে জায়গা জবর দখল করছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন পরিষদের সচিব প্রদীপ চৌধুরী। এছাড়া ওই প্রভাবশালী ৮ জানুয়ারী রাতের আধাঁরে বিদ্যুৎ অফিস এবং পরিষদের কাউকে অবগত না করে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরিয়ে পরিষদের বাউন্ডারীর জায়গায় স্থাপন করেছে বলেও লিখিত অভিযোগ করেছেন পরিষদ সচিব। এদিকে চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার আশংকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে স্হানীয় কৃষকদের মাঝে।
জানা যায়, ১৯৬৮ সালে চাঁনখালী খালের সাথে বোর্ডঘর খালের মাধ্যমে বরকলের সুচিয়া বিল, বরকল, হারলা বিল, পশ্চিমের বিলসহ আশ-পাশের কয়েক হাজার একর ফসলী জমির চাষাবাদের জন্য ওই খালটি খনন করা হয়। ঐ সময় থেকে জোয়ারের সময় পানি সেচ দিয়ে কৃষকরা বোরো ধানের চাষাবাদ করছিল। কৃষকরা জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী আবদুল মাজেদের পুত্র মোঃ রাশেদ অদৃশ্য শক্তির প্রভাব দেখিয়ে সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বোর্ড খালের মাথা ভরাট করে রাতারাতি পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন। কৃষককরা চাষাবাদ করার বোর্ড ঘর খালটি খনন করে চাঁনখালী খালের সাথে সম্পৃক্ত করে যা কৃষকরা কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের বরাদ্দকৃত পাম্প মেশিনের মাধ্যমে অদ্যাবধি চাষাবাদ করে আসছে। এখন খালটির মাথা ভরাট করে ফেলায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ফলে তাদের হাজার হাজার একর বোরো ধানের চাষ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষকরা জানান। ১১ জানুয়ারী কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকার কৃষক এবং স্কীম ম্যানেজার মাসুদ।
সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান বলেন, বোর্ড অফিসের জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল এবং মামলাও চলমান রয়েছে। ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে রাতারাতি বিরোধকৃত জায়গার উপর বাউন্ডারী ওয়াল নিমার্ণ করেছেন। তিনি আরো বলেন, বিগত যুগ যুগ ধরে বোর্ড অফিস খালের মাধ্যমে কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের মাধ্যমে সেচ প্রকল্পের আওতায় হাজার হাজার একর জায়গায় কৃষকরা বোরো ধান আবাদ করে আসছেন। কিন্তু এখন নির্বাচনের ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে উক্ত জায়গা জবর দখল করার চেষ্টা করে।
জায়গার বিষয়ে রাশেদ জানান, তার বড় ভাইয়ের নামে ১০/১২ বছর আগে জায়গার মালিক থেকে উক্ত জায়গা ক্রয় করে। সে জায়গায় তারা ভরাট ও বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করছেন।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চন্দনাইশের ( সেচ বিভাগ ) উপ সহকারি প্রকৌশলী আজমানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি এটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে ব্যবস্হা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি আরও জানান, খালের মাথা ভরাটের ফলে খরা সৃষ্টি হয়ে বোরো ধান চাষাবাদ ব্যাহত হবে,বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।