মাথায় টুপি, পরনে পাঞ্জাবি। ইয়া নবী সালাম আলাইকা মুখে মানুষের ঢল নেমেছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুসে। নগরের মুরাদপুরের আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার মধ্যে তিল ধারণে ঠাঁই নেই। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ মোটরসাইকেলে আবার কেউ ট্রাক কিংবা পিকআপের ওপর চেপে জুলুসে অংশ নেয়।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকা থেকে জুলুস শুরু হয়। মাঠ থেকে মুরাদপুরের সড়কে পৌঁছার পরই জনসমুদ্রে পরিণত হয় জুলুসটি। এবারের ৫১তম জুলুসে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ। তার সঙ্গে রয়েছেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ ও আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ।
মাদরাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ-এ কাদেরিয়া সৈয়দিয়া তৈয়বিয়া থেকে শুরু হওয়া জুলুস বিবিরহাট, মুরাদপুর, মির্জাপুল, কাতালগঞ্জ, চকবাজার অলিখাঁ মসজিদ, প্যারেড মাঠের পশ্চিম পাশ হয়ে, চট্টগ্রাম কলেজ, গণিবেকারি, খাস্তগীর স্কুল, আসকার দীঘি, কাজীর দেউড়ি, আলমাস, ওয়াসা, জিইসি, দুই নম্বর গেট হয়ে জামেয়া মাদ্রাসা মাঠে শেষ হবে। এরপর মাহফিল ও জোহর নামাজের পর দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, জুলুস উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সেজেছে চট্টগ্রাম। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে তোরণ। সাঁটানো হয়েছে ব্যানার-ফ্যাস্টুন। সড়কের দুপাশে বিশেষ পতাকাও পুঁতে দেওয়া হয়েছে। বসেছে খাবারসহ বিভিন্ন আইটেমের অস্থায়ী দোকানও। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে স্বেচ্ছাসেবীরা বিতরণ করছেন শরবত। পুরো এলাকায় বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন। একই সঙ্গে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা কাজ করছেন।
জুলুসে অংশ নেওয়া মো. তুহিন নামে একজন বলেন, ফটিকছড়ি থেকে জুলুসে এসেছি। প্রতিবছরই আসি। এই দিনটির অপেক্ষায় থাকি। এটা আমাদের অন্যতম বড় ঈদ।
গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার বলেন, বিপুল পরিমাণ নবীপ্রেমী লোকজন জুলুসে অংশ নিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ১০ হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবক মাঠে রয়েছেন।
১৯৭৪ সালে নগরের বলুয়ার দীঘি খানকাহ থেকে আল্লামা তৈয়্যব শাহ (রহ.) এ জুলুসের সূচনা করেন। সেই থেকে আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় প্রতিবছর ১২ রবিউল আউয়াল এ জুলুস পালন করা হয়।